চীনের সিনজিয়াং প্রদেশে গত রোববারের সহিংসতায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যদিও এর আগে ওই ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।
চীনের একটি রাষ্ট্রীয় সংবাদ পোর্টাল জানায়, সিনজিয়াংয়ের লুনতাই অঞ্চলে রোববারের সহিংসতায় ৪০ জন ‘সন্ত্রাসী,’ চারজন পুলিশ, ছয়জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
এর আগে দুইজন নিহত হওয়ার খবর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নিহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশে বিলম্বের কারণ চীনা গণমাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়নি বলে শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
৪৫ শতাংশ উইঘুর মুসলিম ও ৪০ শতাংশ সান চাইনিজের বসবাস থাকা সিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমরা প্রায়ই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে চীন। তবে নিজেদের অধিকার রক্ষার আন্দোলন করলে পুলিশ দমনাভিযান শুরু করে বলে অভিযোগ উইঘুরদের।
প্রাদেশিক সরকারের সংবাদ পোর্টাল তিয়ানসানের খবরে বলা হয়, রোববার বিকাল ৫টার দিকে দুটি থানা, একটি খোলা বাজার ও একটি বিপণী বিতানের প্রবেশ পথে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
‘দাঙ্গাবাজদের’ কেউ পুলিশের গুলিতে কেউ আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছে। ঘটনায় আহত হয়েছে ৫৪ জন বেসামরিক ব্যক্তি। এছাড়া দুই ‘দাঙ্গাবাজকে’ ধরা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনজিয়াংয়ে রোববারের ওই হতাহতের ঘটনা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন দেয়া কঠিন। কারণ সেখানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
উইঘুর সমস্যা
চীনের অভিযোগ, বিদেশি শক্তির সহায়তায় ওই অঞ্চলের উইঘুর মুসলিমরা অরাজকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। তবে উইঘুরদের দাবি, কেন্দ্রের নির্যাতনমূলক শাসন ওই রাজ্যের বাসিন্দাদের উগ্র করে তুলছে।
চীনের কুনমিং ও উরামকি অঞ্চলে কয়েক বছর ধরে বড় ধরনের হামলার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এসব হামলায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
গত জুলাইয়ে সিনজিয়াংয়ের ইয়ারকান্ত অঞ্চলে সহিংসতায় অন্তত ৯৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যা নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গিয়েছিল।
‘সন্ত্রাসী হামলায়’ নিহতের ওই ঘটনা ঘটেছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তখন বলা হয়েছিল।
তবে রমজান মাসে পুলিশের চালানো একটি দমনাভিযানের প্রতিবাদে লোকজন রাস্তায় নামলে গুলি চালিয়ে ৯৬ জনকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করে আন্দোলনকারীরা।
সম্প্রতি ইলহাম তোহটি নামে এক উইঘুর শিক্ষাবিদকে বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগে কারাদণ্ড দেয়ার পরই রোববারের ওই সহিংসতার খবর পাওয়া যায়।
ওই শিক্ষাবিদ চীনের উইঘুর ও বেইজিং কর্তৃপক্ষের মধ্যে সংলাপ আয়োজনের দাবি নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের কাছে যেতেন। তাকে কারাদণ্ড দেয়ার পর ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।