চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মূহুর্তে ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত হয়েছিলো। সাংবাদিক নামধারী একটি চক্র ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবী ভূমিকাকে সন্ত্রাসী তৎপরতা বলার দু:সাহস দেখাচ্ছে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্যাডে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্র—জনতার বিপ্লবকে সন্ত্রাসী তৎপরতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে গণহত্যার উস্কানীদাতা সাংবাদিক নামধারীদের বিচার থেকে রক্ষা করা, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ফ্যাসিবাদের দোসরদের নানা অপকর্ম আড়াল করা ও পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের সহায়তায় লুটপাট করা অর্থ-বিত্ত রক্ষা করা’র জন্যই চক্রটি এই অপতৎপরতায় মেতে উঠেছে।
৫ আগষ্ঠ ছাত্র-জনতা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে সেখানে আবারো গেড়ে বসার জন্য নানা অপতৎরতায় চালায় ফ্যাসিবাদের দোসররা। তারা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে প্রেসক্লাবে নিজদের দখলদারিত্ব বজায় রাখার চেষ্টা চালায়। যা ছাত্র-জনতা এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সাংবাদি;করা প্রতিহত করে। অতীতে যেমন প্রেস ক্লাব থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচিতে হামলা করা হতো তেমনি গণহত্যার উস্কানীদাতাদের বিচারের দাবিতে গত ১৪ আগষ্ট আয়োজিত মানববন্ধনে হামলা করার দু:সাহস দেখানো হয়।
ফ্যাসিবাদের দোসর আর ছাত্র জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যার প্রত্যক্ষ মদদ দাতাদের কবল থেকে ক্লাবকে উদ্ধার করার চলমান উদ্যোগ নস্যাৎ করার জন্য নানা ধরনের কূটকৌশল ও বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালাচ্ছে। ক্লাব এবং গণমাধ্যমের মত স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারে সহযোগী হিসেবে কৃত অপরাধের দায় থেকে রেহাই পেতে এখন প্রলাপ বকা শুরু করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী গণমাধ্যমের এসব পালের গোদার কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ আর ব্যাংক হিসাব দুদকের মাধ্যমে তদন্তের আওতায় আনলেই তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
এইসব কিছু আড়াল করার জন্য অতীতের মত তারা হলুদ সাংবাদিকতার চর্চ্চা অব্যাহত রেখে ছাত্র-জনতার বিপ্লবী অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালায়। যার অংশ হিসেবে গত ২৬ আগস্ট একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে সন্ত্রাসী তৎপরতা উল্লেখ করার দু:সাহস দেখিয়েছে।
এই চক্রটি প্রেস ক্লাব ও গণমাধ্যমের সাইন বোর্ড ব্যবহারের মাধ্যমে গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদি সরকারের দোসর হিসেবে করা অপকর্মের দায়মুক্তির অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। চক্রটি সাংবাদিক পরিচয়ে বিগত সরকারের পদলেহন করার পাশাপাশি ভিন্নমত দলনে ন্যাক্কারজনক ভূমিকা রেখেছে। ২০১৩ সালে এদের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক নয়া দিগন্ত, দিগন্ত টেলিভিশন, দৈনিক সংগ্রাম ও দৈনিক কর্ণফুলী অফিস ভাংচূর করা হয়েছিলো। সবশেষ পতিত ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ছাত্র-গণহত্যার উস্কানী দিয়ে সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে কলংকিত করেছে।
আমরা মনে করি এই অপরাধের বিচার থেকে তারা কখনো রেহায় পেতে পারেনা। গণমাধ্যম এবং প্রেস ক্লাবের মত প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনে তাদের আর কোন স্থান হওয়ার সুযোগ নেই। ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সরকারের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহবান, সাংবাদিক নামধারী ফ্যাসিবাদের চিহ্নিত দোসরদের বিচারের আওতায় এনে সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে কলংকমুক্ত করা হোক। একই সাথে ফ্যাসিবাদের সহায়তায় তারা যে সম্পদের পাহাড় গড়েছে তা অবিলম্বে উদ্ধার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হোক।