বাংলাদেশসহ সমগ্র পৃথিবী আজ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতায় ভারাক্রান্ত। এ থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজে বের করতে হবে। সম্প্রতি নাসির নগরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে এবং বিগত সময়গুলোতে যে ভয়াবহ জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড ঘটানো হয়েছে তা মূলত একটি ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের অংশ। এই ষড়যন্ত্র কেবল দেশের বিরুদ্ধেই নয় এটি পবিত্র ধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধেও। এই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা আসলে ইসলাম থেকে সৃষ্টি হয়নি। ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে এগুলো সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এর বিস্তার ঘটানো হচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীব্যাপী ইসলামের সুনাম ক্ষুণ্নহচ্ছে, মুসলিমদেরকে সন্ত্রাসী বলে প্রচার করা হচ্ছে। কাজেই এই সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও যাবতীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আজ সকলকে সোচ্চার করে তুলতে হবে। এই কাজে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করতে হবে প্রগতিশীল ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী মানুষদের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে হেযবুত তওহীদের এমাম এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন, জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতার মূল উৎস একই, সেটা হলো ধর্মবিশ্বাসের অপপ্রয়োগ। ধর্মবিশ্বাসী মানুষদেরকে একটি বিকৃত আদর্শ দ্বারা উদ্বুদ্ধ করে এই কাজে লিপ্ত করানো হয়, কাজেই এর বিরুদ্ধে কেবল শক্তি প্রয়োগ করে পূর্ণরূপে সফল হওয়া সম্ভব নয়। এটি নির্মূলের জন্য প্রয়োজন এর বিরুদ্ধে একটি সঠিক আদর্শ তথা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মাঝে উপস্থাপন করা। ষড়যন্ত্রকারীরা কোর’আন-হাদিসের যে সমস্ত অংশ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সরলপ্রাণ মানুষকে বিপথগামী করে সেই আয়াতগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। একজন দেশপ্রেমিক মানুষ হিসাবে এবং একজন মো’মেন হিসাবে ইমানী কর্তব্যবোধ থেকে দেশের বিরুদ্ধে যাবতীয় ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
আমাদের এই উপমহাদেশে শত শত বছর হিন্দু-মুসলিম একত্রে বসবাস করে আসছে। তাদের মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ব্রিটিশরা যখন এখানে শাসন প্রতিষ্ঠা করল তখন এই অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দিল। তখন থেকে শুরু হলো সাম্প্রদয়িক দাঙ্গা, স্বার্থ উদ্ধার করল ব্রিটিশরা। আজও কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ের জন্য কখনো ধর্মকে ব্যবহার করে আবার কখনো বা অন্য কোনো ইস্যুতে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে সংঘাতের মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। বক্তারা এই স্বার্থ উদ্ধারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে জঙ্গিবাদ ও সম্প্রদায়িকতা বিরোধী সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদার্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাভিশন, এস এ টিভি, দেশ টিভি, নিউজ ২৪, দীপ্ত টিভি, বৈশাখী টিভি, মোহনা টেলিভিশন, জেটিভি অনলাইলন সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিডিপত্র/আমিরুল