সাইফুর রহমান
বর্তমানে আমাদের এই দেশবাসী আর কীসের অপেক্ষায় আছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। পাকিস্তানীরা আমাদের দেশের উপর বর্বর আক্রমণ চালিয়েছিল বলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা যুদ্ধ করতে বাধ্যও হয়েছিলাম। কেউ যুদ্ধ করেছিল দেশকে ভালোবেসে, কেউ যুদ্ধ করেছিল স্বজন হারিয়ে, কেউ যুদ্ধ করেছিল আত্মরক্ষার জন্য। কারণ যা-ই হোক, যুদ্ধ তাদেরকে করতে হয়েছিল। আজ আমরা তাদের উত্তরসুরীরা কি বহিঃশত্র“র দ্বারা আক্রান্ত হলে যুদ্ধ করব বলে বসে আছি? ইতোমধ্যেই গণতান্ত্রিক রাজনীতির হামলায় দেশের আর্থিক ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই করছে। সারাদেশে হরতাল অবরোধের নামে চলছে চরম নৈরাজ্য। রাজনীতিকদের ক্ষমতার দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছেন দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ, দেশের নিরপরাধ সাধারণ নারী পুরুষ এমনকি নি®পাপ শিশুদেরকেও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। ৩ মার্চ এর দৈনিক প্রথম আলোয় ৫৭ দিনের অবরোধে মোট ক্ষয়ক্ষতির একটি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়। সেমতে এই সহিংসতায় মৃত্যুর শিকার হয়েছেন ১১৩ জন। পেট্রোলবোমাসহ নানা ধরনের নাশকতামূলক কাজে সহস্রাধিক ব্যক্তি মারাÍকভাবে আহত হয়েছে, ১২৬৪টি গাড়ি আগুনে পোড়ানো ও ভাঙচুর করা হয়েছে। অন্য সংবাদসূত্রে জানা যায়, ৬টি লঞ্চে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, ২৫ দফায় ট্রেনে নাশকতা করা হয়েছে। দেশের প্রায় ১৫ লাখ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে খেলা করা হচ্ছে। এ সবই হচ্ছে রাজনীতি আর ধর্মের নামে।
এত তাণ্ডবেও কি আমাদের ঘুম ভাঙবে না? যে জাহাজের তলা ফুটো হয়ে যায়, সে জাহাজটির ফুটো বন্ধ করার দায়িত্ব প্রতিটি যাত্রীর। আমরা সে উদ্যোগ নিয়েছি, শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব সোপর্দ করে বসে থাকলে হবে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও দিন-রাত জনগণের সহযোগিতা চেয়ে চেয়ে হয়রান হচ্ছে। সংকট সমাধানের জন্য বিদেশী প্রভুদের ডেকে আনার তোড়জোড় চলছে। তারা আসলে আমাদের রক্ষা করার জন্য আসবে না, ধ্বংস করার জন্যই আসবে – হয় আজ, নয় কাল এই সবুজ দেশটিও পুড়ে ইরাকের মতো অঙ্গার হয়ে যাবে। এখনো সময় আছে দেশকে বাঁচানোর। আমরা চাই না, এ দেশটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হোক। আসুন, আমরা রাজনীতির নামে এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণবিদ্রোহ গড়ে তুলি, রুখে দেই এই ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের কালসাপকে। জাগ্রত জনতার সন্ধানে পথে অপেক্ষা করছি আমরা হেযবুত তওহীদ।
লেখক: মুখপাত্র, হেযবুত তওহীদ