জয়পুরহাটে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার সম্প্রদায়ের কারিগররা

জয়পুরহাটে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার সম্প্রদায়ের কারিগররা।

জয়পুরহাট প্রতিনিধি: কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে জয়পুরহাটের কামার সম্প্রদায়ের কারিগররা ব্যস্ত, দা-বটি, ছুড়ি সহ মাংস কাটার তৈজসপত্র তৈরীতে। চাহিদা মোতাবেক এসব সামগ্রী তৈরীতে তারা এখন কাজ করছেন দিনরাত। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ সময় তাদের বেড়ে যায় কাজের পরিধি, বেড়ে যায় আয় রোজগারও। তবে কয়লার দুঃপ্রাপ্ততা, উচ্চ মূল্য, আর পুঁজির অভাবে চাহিদা মাফিক এসব তৈজসপত্র সরবরাহ করতে পারছেন না তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জয়পুরহাটের ৫টি উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার কামার পরিবারের বসবাস। এদের মধ্যে শুধুমাত্র সদর উপজেলার দূর্গাদহ বাজারেই রয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। তারা এখন খুবই ব্যস্ত আসন্ন ঈদের কোরবানীর পশু কাটার তৈজসপত্র তৈরীতে। দিনরাত চলছে তাদের হাপর। ঢুং-ঠাং শব্দে মুখর এ কামার পাড়া। এ শিল্পের সাথে জড়িত কামার সম্প্রদায়ের কারিগররা লোহার তৈরী নিত্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র তৈরীর মাধ্যমে পৈত্রিক পেশা আকড়ে ধরে থাকলেও তৈজসপত্র তৈরীতে ব্যবহৃত লোহা, কয়লা ও ফাইলের উচ্চমূল্যের কারনে লাভ কম হওয়ায় এবং স্টীল আর মেলামাইনের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে অনেকে বাধ্য হয়েছেন পেশা পরিবর্তনে।
কামার শিল্পী স্বদিব কর্মকার, নিখিল কর্মকার, দিবাস মহন্ত, গজেন কর্মকার, সন্তোস কর্মকার’রা জানান যে, আমাদের কাছে মাঝে মাঝে ছবি উঠায় ও ভিডিও করে, পেপার-পত্রিকাতেও লেখালেখি ছাড়া আর কিছুই হয়না। সরকারের পক্ষ থেকে বা স্থানীয় প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে আমাদের কোন পৃষ্টপোশকতার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়না।
দুর দুরান্ত থেকে আগত কসাই ও এলাকার ক্রেতারা গৃহস্থালীর অন্যান্য জিনিষপত্র কিনতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কামার পাড়ায়। দিচ্ছেন চাহিদা, মূল্যের ব্যাপারে সন্তুষ্ঠু তারা। জেলার ক্ষেতলাল পৌর শহরের মুন্সিপাড়া মহল্লার লিটন কসাই জানালেন, সারা বছর যে রকম মূল্যে তারা দা-বটি বিক্রি করেন, ঈদকে সামনে রেখেও একই মূল্যে তারা বিক্রি করছেন।
এ বিষয়য়ে দৃষ্টি আকর্ষন করলে জয়পুরহাট বিসিক এর উপ-ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন বলেন, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে এ শিল্পকে একটি টেকসই শিল্প হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি আরো জানান, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থায় কামার সম্প্রদায়ের কারিগরদের তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদেরকে বিসিক থেকে ঋণ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও জয়পুরহাটে কাউকে ঋণ দেয়া হয় নাই।

Comments (0)
Add Comment