বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধের মধ্যে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ আরো দুই জনের মৃত্যু ঘটেছে। গত কাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এই দুই জনের মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত কাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মৃত্যু হয় সিলেটে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ ট্রাকচালক বকুল দেবনাথের। মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, গত ২০ জানুয়ারি সিলেটে ট্রাকে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় বকুল দগ্ধ হয়েছিলেন। দু’দিন পর তাকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। বকুলের শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে আমাদের রংপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হওয়ার চারদিন পর গত কাল মারা গেছেন ট্রাকচালক আবদুর রশীদ। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত কাল সকাল ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে ওই ইউনিট প্রধান অধ্যাপক মারুফুল ইসলামের বরাতে জানা গেছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধের মধ্যে গত ২৪ জানুয়ারি দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়েছিলেন আব্দুর রশীদ। নিহত রশীদ চিরিরবন্দর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের মহির উদ্দিনের ছেলে। চিকিৎসক মারুফুল ইসলাম বলেন, আবদুর রশীদের শরীরের ৯৫ ভাগই পুড়ে গিয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার সকাল থেকে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি মারা যান।
চিরিরবন্দর থানার ওসি রওশন মোস্তফা জানান, ২৪ জানুয়ারি রাতে পণ্য বোঝাই ট্রাক নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে চিরিরবন্দরে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কে অবরোধকারীরা পেট্রোল বোমা ছুড়লে আব্দুর রশীদ ও তার সহকারী হামিদুল ইসলাম দগ্ধ হন। হামিদুল এখনো রংপুর মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি গত ৬ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। অবরোধে প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাংচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটছে, যাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন অন্তত ৩০ জন। আহত হয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি।