ত্রিপুরায় ইউপিডিএফে’র বিরুদ্ধে সশস্ত্র মহড়ার অভিযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ত্রিপুরার স্থানীয় একটি সুশীল সংগঠন দাবি করেছে, সীমান্ত লাগোয়া রাজ্যটির কিছু অংশে সন্দেহভাজন বাংলাদেশভিত্তিক একটি সশস্ত্র গোষ্ঠি ক্যাম্প গেড়ে অবস্থান করছে। এ সশস্ত্র গোষ্ঠিটি ভারতের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।

ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস বুধবার এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রিয়াংকা দেব বর্মনের করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার একটি সংবাদ সম্মেলন করেন ত্রিপুরার সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন কাউন্সিল অব তিপ্রাসা হোদা-এর নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিল নেতারা বলেন, ত্রিপুরার ধালাই জেলার নারিকেলকুঞ্জে সশস্ত্র গোষ্ঠিগুলোকে কয়েকটি তাঁবু পাহারা দিতে দেখেছেন তারা। নারিকেলকুঞ্জ ত্রিপুরার অন্যতম ট্যুরিস্ট স্পট। ত্রিপুরার সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনটির নেতাদের ধারণা, এরা পার্বত্য চট্টগ্রামের ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফের সদস্য হয়ে থাকতে পারেন।

পার্বত্য শান্তিচুক্তির বিরোধীতা করে ১৯৯৮ সালে জন্ম হয় ইউপিডিএফের। বিচ্ছিন্নতাবাদী এ সংগঠনটি দেশের অভ্যন্তরে পার্বত্য জেলাগুলোয় মাঝেমধ্যেই সশস্ত্র হামলা চালায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক রাজনৈতিক সংগঠন (যেগুলো কট্টরপন্থী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী নয়) এসব হামলার শিকার হয়। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে প্রায়ই।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি জানায়, সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে একটি চিঠি লিখেন কাউন্সিল অব তিপ্রাসা হোদা-এর নেতারা। ওই চিঠিতে তারা দাবি করেন, রাজ্যের ধালাই জেলায় বেশ কিছু সংখ্যক চাকমা অভিবাসীরা অবস্থান করছেন। তারা সেসব চাকমা অভিবাসীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ওই পত্র পাঠানো কয়েকদিনের মধ্যে এবার তারা সংবাদ সম্মেলন করে সশস্ত্র গোষ্ঠির অবস্থানের কথা জানালেন। ওই চিঠিতে কাউন্সিল নেতারা সশস্ত্র গোষ্ঠির অবস্থান রয়েছে বলে কোনো দাবি জানাননি। সেখানে চাকমা অভিবাসীদের নিয়ে তাদের আপত্তির কথা তারা জানিয়েছেন।

কাউন্সিল নেতারা দাবি করেন, ধালাই জেলার নারিকেলকুঞ্জ, নাইকাচেরা, টুইচাকমা এবং থাকুরচেরায় এসব চাকমারা বাংলাদেশ থেকে গিয়ে অবস্থান করছেন। তারা (চাকমারা) বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সীমারেখার নিকটবর্তী গ্রামগুলো পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছেন।

তবে ভারতের চাকমাদের সংগঠন চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা (সিএনসিআই) সুশীল সংগঠনটির এ দাবি প্রত্যাখান করেছে। তারা বলছে, যেসব চাকমা অবস্থান করছেন, তারা ত্রিপুরার স্থানীয় বাসিন্দা; বাংলাদেশ থেকে আসেননি। এ নিয়ে অবশ্য ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

Comments (0)
Add Comment