নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: ৩দিনের প্রবল বষর্ণে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ ,বিরামপুর ,হাকিমপুর , ঘোড়াঘাট ৪ উপজেলায় ৫০হাজার বিঘা জমির আমন রোপা পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। এর কারণে কৃষকের অতিকষ্টের রোপন করা আমন ধানের রোপা ক্ষতি সাধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকার ক্ষুদ্র প্রান্তিক শ্রেনীর কৃষকেরা আমন ফসল রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদিকে প্রবল বর্ষনের কারণে ৪ উপজেলার নিচু এলাকায় প্রায় ১হাজার পুকুরের মাছ বের হয়ে ২ কোটি টাকার লোকসান মাথায় নিয়ে দিশে হারা ৫শতাধিক মৎস্য চাষী। মৎস্য চাষী তহিবুর রহমান জানান তিনি এ বছর অন্যের পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তার ৪টি পুকুরে মাছ উৎপাদন হয়েছিল প্রচুর। আর কয়েকদিন পার হলেই ওই মাছগুলো বাজারে বিক্রি করতে পারত। এই বর্ষণের কারণে তার পুকুরে সব মাছ বের হয়ে গেছে। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল হান্নান জানান বন্যায় নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১২৯টি পুকুর আয়তন ৩৫.৮১ হেক্টর ক্ষতির পরিমাণ ৯৬.৬৯মেট্রিকটন মাছ। টাকা ৯৬.৬৯ লাখ। তিনি জানান ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষীদের তথ্য সংগ্রহ করে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে জানিয়েছেন। এদিকে বিরামপুর উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ১০টি গ্রামে প্রবল বর্ষণে খিয়ার মাহমুদপুর ,দক্ষিন দাউদপুর ,রণ গ্রাম, গবিন্দপুর, হরিল্যাখুর, মকুন্দপুর সহ পনি বন্দি অবস্থায় রয়েছে ১০হাজার নারী পুরুষ। দেখা দিয়েছে গো খাদ্যের তিব্র সংকট। পার্শ্ববতী ভারত সীমান্ত পার হয়েও আসছে পানি। কৃষি ফসল সহ পুকুরের মাছ ক্ষতি সাধিত হয়েছে। গত রোববার সকাল থেকেই দিনাজপুর ৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শিবলী সাদিক বিরামপুরের যমুনা নদীর ভাঙ্গনের বাঁধ পরিদর্শন শেষে সীমান্ত সংলগ্ন উল্লেখিত গ্রামের জনসাধারনের মাঝে শুকনো খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এ সময় বিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ,পৌর মেয়র মোঃ লিয়াকত আলী সরকার , সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ খাইরুল ইসলাম রাজু , বিরামপুর দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিনিধি প্রভাষক এস এম আলমগীর , নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম রুহুল আমিন প্রধান ,সাংবাদিক জালাল উদ্দিন রুমি , আবু সাইদ সহ ওই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। এদিকে বন্যার পনির তোড়ে হিলি স্থল বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হাটু পানি। এর কারণে স্থল বন্দরের জনসাধারণ অতি কষ্টে চলাফেরা করছে। ঘোড়াঘাট উপজেলার করতোয়া নদী সংলগ্ন এলাকায় আমন ধান ও পুকুরের মাছ বের হয়ে গেছে। নবাবগঞ্জে টানা বৃষ্টিতে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট ও ফসলের মাঠ। ভরে গেছে পুকুর নদী নালা। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মৎস্যচাষীরা। শত শত বিঘা জমির আমন ধান রয়েছে পানি নিচে। কৃষকেরা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি সাধনের আশংকা করছে। উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী মোঃ কামাল হোসেন জানান- টানা প্রবল বৃষ্টিপাতে উপজেলার ৯টি ইউনিনের অনন্ত ১৩০টি পুকুর ডুবে গিয়ে পুকুরের মাছ পুকুর থেকে বের হয়ে গিয়ে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৎস্যচাষী মোঃ তহিবুর রহমান জানান- টানা বর্ষনে তার ৩টি পুকুর পানি নিচে নিমজ্বিত হয়েছে। এতে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার রামপুর গ্রামের মাহাবুর রহমান জানান- তার হলদির ফসল পানির নিচে। ২/১ দিনের মধ্যে পানি নেমে না গেলে তার সমস্ত হলুদের ফসল পচে যাবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরে আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- ভাদুরিয়া ইউনিয়নের অনেক রাস্তাঘাট পানির নিচে রয়েছে এবং কাঁচাঘর বাড়ী ঘর ঝুকিপুর্ন অবস্থায় রয়েছে। তুলশীগঙ্গা ও করতোয়া নদী তীরবর্তি আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি সাধনের আশংকা করছেন তিনি। তিনি জানান- রোস্তপুর গ্রামের কেই কেই কাঁচাঘরবাড়ী ঝুকিপুর্ন হওয়ায় ঘরবাড়ী ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার আবু রেজা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান- টানা বর্ষনে প্রায় ৪০ হেক্টর আমন ধানের ফসল পানির নিচে নিমজ্বিত হয়েছে। তবে ৭২ ঘন্টার মধ্যে পানি নেমে গেলে ধানের কোন তেমন কোন ক্ষতি হবেনা। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সংসদ সদস্য জানান বণ্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা তিনি পরিদর্শন করেছেন। প্রতিটি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করণ সহ সাবির্ক সহায়তা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ,কৃষি কর্মকর্তা ও মৎস্য কর্মকর্তা দের নির্দেশ দিয়েছেন।