অনলাইন ডেস্ক: মধ্য ও পূর্ব এশিয়া জুড়ে বিস্তৃত আলতাই পর্বতশ্রেণি। তারই একটি অংশ মঙ্গোলিয়ার অন্তর্ভুক্ত। সেখানেই প্রাচীন সভ্যতার খোঁজে চলছিল খননকার্য। সেই সময়েই একটি গুহার ভিতর থেকে আবিষ্কৃত হয় একটি মানব দেহাবশেষ। বরফের মধ্যে মমির আকারে রক্ষিত ছিল দেহটি। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেন, দেহটি প্রায় ১৫০০ বছরের পুরনো। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে, সেই মমির পায়ে মিলেছে একটি অ্যাডিডাস কোম্পানির স্নিকার জুতো। অথচ অ্যাডিডাস কোম্পানিটির বয়স মোটামুটি ৯০ বছরের মতো, ১৯২৪ সালে এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠা।
আসলে গবেষকরা এই মমিটিকে মাটি খুঁড়ে বার করে আনছেন— সেই দৃশ্যের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ পায়। তাতে দেখা যায় মমিটির দু’টি পায়ে এক জোড়া জুতো রয়েছে। লাল রং-এর জুতোর গায়ে রয়েছে সাদা তিনটি স্ট্রাইপ। এই তিনটি সাদা স্ট্রাইপ অ্যাডিডাসের জুতোর একেবারে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ভিডিওটির দর্শকরা এই ট্রেডমার্কটি চিনতে ভুল করেননি। সঙ্গে সঙ্গে উঠতে থাকে প্রশ্ন, দেড় হাজার বছর আগেকার একজন মানুষের পায়ে অ্যাডিডাসের জুতো আসা কীভাবে সম্ভব? তাহলে প্রাচীন সেই মানুষগুলো কি আবিষ্কার করেছিলেন টাইম মেশিন? তাঁরা কি ভবিষ্যতে পাড়ি দিয়ে কোনওভাবে সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছিলেন অ্যাডিডাসের জুতো?
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৮০০ মিটার উচ্চতায় পাওয়া গিয়েছে এই মমিটি। মমিটির আশেপাশে পাওয়া গিয়েছে কিছু পোশাক-আশাক, একটি মাটির পাত্র, আর একটি গামলা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, মমিটি একজন মহিলার। তবে পুরো দেহটি নয়, পাওয়া গিয়েছে সেই মহিলার একটি হাত এবং দু’টি পা। সেই পা দু’টিতেই পাওয়া গিয়েছে সেই রহস্যময় জুতো। খোভদ মিউজিয়ামের বিশেষজ্ঞ বি সুখবাতার বলেন, ‘‘যে অংশে মমিটি পাওয়া গিয়েছে সেখানে প্রায় সারাবছরই তাপমাত্রা থাকে শূন্য ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে। এই নিম্ন তাপমাত্রার কারণেই মমির জুতোটি পর্যন্ত রয়ে গিয়েছে অবিকৃত।’’
কিন্তু সেই জুতো কি সত্যিই অ্যাডিডাসের তৈরি? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সেরকম সিদ্ধান্তে পৌঁছবার কোনও কারণ ঘটেনি। যতদূর মনে হয়, জুতোটিকে পায়ের সঙ্গে আঁটোসাঁটো করে বাঁধবার জন্যেই তিনটি সাদা কাপড়ের ফালি জুতোর উপর দিয়ে বেঁধেছিলেন ওই মহিলা। সেটাকেই বর্তমানে অ্যাডিডাসের চিহ্ন বলে মনে হচ্ছে।
সে বিজ্ঞানীরা যা-ই বলুন, সাধারণ মানুষের জল্পনা-কল্পনা কি এত সহজে ক্ষান্ত হয়? ইন্টারনেটে ক্রমাগত চলছে তোলপাড়। বলা হচ্ছে, প্রাচীন যুগের সভ্যতা ছিল এতটাই উন্নত যে, টাইম মেশিনও তৈরি করেছিলেন সে যুগের মানুষ। আসলে কল্পনার তো বল্গাহীন হতে বাধা নেই।