অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতেই নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন নাসুম আহমেদ। চার উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাঁহাতি এ স্পিনার। তবে অসাধারণ বোলিংয়ের কারণে দেশব্যাপী প্রশংসায় ভাসলেও সাত বছর ধরে তার মাথায় ঝুলছে সুনামগঞ্জ জেলা ক্রিকেট থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞার গ্লানি।
২০১৫ সালে ক্রিকেট লিগে জেলার পক্ষে না খেলে বিভাগীয় সিলেট দলে খেলায় তাকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সুনামগঞ্জের প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবে খেলতেন নাসুম আহমেদ।
প্যারামাউন্ট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এনাম আহমদ বলেন, ‘সুনামগঞ্জের পক্ষে ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ না করায় জেলা ক্রীড়া সংস্থা তাকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা দেয়। দীর্ঘ সাত বছর ধরে সে সুনামগঞ্জে ক্রিকেট খেলে না।’
এদিকে বিসিবির কাউন্সিলর ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক রেজুয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘জেলা ক্রীড়া সংস্থার আদেশ পালন না করায় তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। এখন যদি তিনি বা তার ক্লাবের পক্ষে কেউ তা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন তা সাদরে গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে সুনামগঞ্জের নবীন ক্রিকেটারদের দাবি, নাসুমের এ নিষেধাজ্ঞার আদেশ যেন দ্রুত প্রত্যাহার করা হয়। কিশোর ক্রিকেটার তাছলিম আহমেদ জানান, সুনামগঞ্জে অনেক তরুণ ক্রিকেটার রয়েছেন, তারা ভালো কোনও কোচের প্রশিক্ষণ পান না। নাসুমের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে তিনি সুনামগঞ্জের ক্রিকেটকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারবেন।
ফাহিম আহমদ বলেন, ‘নাসুম একজন প্রতিভাবান পরিশ্রমী খেলোয়াড়। তিনি ব্যাটিং ও বোলিংয়ে সমান পারদর্শী। তার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা উচিত।’
ক্রিকেটার নাজিম বলেন, ‘সাত বছর ধরে নাসুমের মত একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে আজীবন নিষিদ্ধ করায় সুনামগঞ্জের ক্রিকেটের অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে এটি প্রত্যাহারের।’
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মধুরাপুর গ্রামের আক্কাছ আলীর ছেলে নাসুম। ২০১৩ সালে নাসুম সুনামগঞ্জের প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। খেলেছেন বিভাগীয় দলেও। পরে তিনি জাতীয় দলে ডাক পান। অলরাউন্ডার হলেও বোলিংয়েই বেশি পারদর্শী নাসুম। সুনামগঞ্জে পৈতৃক নিবাস হলেও মূলত সিলেটে পড়ালেখা ও ক্রিকেটের চর্চা করেছিলেন। খেলার জন্য তাকে সুনামগঞ্জ নিয়ে আসতেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে চার ওভার বোলিং করে ১৯ রান খরচ করে চার উইকেট তুলে নিয়েছিলেন নাসুম। যদিও দ্বিতীয় ম্যাচে ২৯ রান খরচ করেও কোনও উইকেট পাননি তিনি।