দেশে উত্তোলনযোগ্য নীট গ্যাস মজুদের পরিমাণ ১৩.৬৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য নীট গ্যাস মজুদের পরিমাণ ১৩.৬৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। প্রধানমন্ত্রী আজ সংসদে তাঁর জন্যে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনএফ-এর এসএম আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে এতথ্য জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এ যাবত আবি®কৃত ২৬টি গ্যাস ফিল্ডে গ্যাস মজুদের পরিমাণ ২৭.১২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩.৪৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা হয়েছে। বাকি গ্যাস বর্তমানে মজুদ রয়েছে।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী জ্বালানি হিসেবে বিভিন্ন খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে গ্যাসের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধির হার গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির হারের তুলনায় বেশি। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের সময় গ্যাসের গড় উৎপাদন ছিল দৈনিক ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে দৈনিক ২ হাজার ৭৪০ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩ হাজার ২শ’ মিলিয়ন ঘনফুটের অধিক। বিগত সাত বছরে গ্যাসের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেলেও চাহিদা অধিক হাড়ে বাড়তে থাকায় সরবরাহের তুলনায় ঘাটতি এখনও প্রায় দৈনিক ৫শ’ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ নতুন মজুদ প্রাপ্তির জন্য অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর সাথে এলএনজি আমদানি করে দেশের গ্যাসের চাহিদা পূরণের পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স মোবারকপুরে একটি অনুসন্ধান কূপ ও সালদায় একটি উন্নয়ন কূপ খননের কাজ করছে। তাছাড়া বিজিএফসিএল কর্তৃক পরিচালিত তিতাস ফিল্ডে একটি উন্নয়ন কূপের খনন কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন গ্যাস স্ট্রাকচার চিহ্নিতকরণের জন্য বাপেক্স দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২-ডি সাইসমিক সার্ভে কার্যক্রম, বিদ্যমান গ্যাস ক্ষেত্রের মজুদ পুনঃমূল্যায়নের জন্য ৩-ডি সাইসমিক সার্ভে কার্যক্রম এবং তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের লক্ষ্যে অনুসন্ধান কূপ খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে ৫৭টি অনুসন্ধান কূপ খনন, ৪৩টি উন্নয়ন কূপ খনন এবং ২০টি কূপের ওয়ার্কওভার করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ সকল কূপ থেকে আনুমানিক দৈনিক ১ হাজার ৭৮ থেকে ১ হাজার ২৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, দেশের সমুদ্রাঞ্চলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান চালানোর জন্য কয়েকটি ব্লক আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিকে ইজারা প্রদান করা হয়েছে। সে সকল কোম্পানি অগভীর সমুদ্রাঞ্চলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্প্রতি ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সামুদ্রিক সীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় বর্তমানে গভীর এবং অগভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান উপযোগী ব্লকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়া সম্ভাব্য বিডারদের আকর্ষণ করতে সমুদ্রাঞ্চলে নন-এক্সক্লুসিভ মাল্টিক্লিয়েন্ট ২-ডি সাইসমিক সার্ভে সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে আহ্বানকৃত দরপত্রের বিপরীতে প্রাপ্ত দরপত্রের মূল্যায়ন কাজ চলছে।

Comments (0)
Add Comment