রেজাউল করীম,নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরা চরাঞ্চলীয় নিলক্ষায় ৮টি গ্রামে আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’দলের অব্যাহত টেটা যুদ্ধের ২য় দিনে ৪ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিলক্ষা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম ও পরাজিত সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হক সরকারের এলাকাবাসী জানান, তাদের আধিপত্ত বিস্তারের জন্য গত রোবাবর সকাল থেকে উভয় দলের মধ্যে টেটাযুদ্ধ চলছে। তাদের বিবদমান টেটাযুদ্ধে সোমবার দুপুরে ৩ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত চিকিৎসাধীণ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তির মাঝে বিকেলে আরো ১ ব্যক্তি নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ও সাবেক চেয়ারম্যান আঃ হক সরকারের দলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের পর থেকে সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুই চেয়ারম্যানের দল ও পুলিশসহ ত্রিমুখী সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের গুলি ও টেটার আঘাতে আহত হয়েছেন রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজহারুল ইসলাম সরকার, এস আই আসাদুজ্জামান আসাদ, জিয়াউর রহমান, এএসআই তোফাজ্জল হোসেন, মাসুদুর রহমান মাসুদ, কনষ্টেবল জিল্লুর রহমান ও সাইদুর রহমানসহ ৭ পুলিশ ও উভয় দলের প্রায় ৫০ ব্যক্তি। রায়পুরা থানা ও নরসিংদীর পুলিশ লাইনের দাঙ্গা পুলিশ একত্রিত হয়ে এ এটেটাযুদ্ধ নিয়ন্ত্রনের জন্য চেষ্টা করলে দাঙ্গাবাজ লাঠিয়ালরা পুলিশের উপর চড়াও হয়। আহতরা স্থানীয় নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ও পার্শ্ববর্তী বি-বাড়িয়া জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে রায়পুরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ূন কবিরের উপস্থিতিতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় গ্রামবাসীরা পুলিশের উপর ককটেল ও টেটা নিক্ষেপ করে হামলা চালিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এসময় রায়পুরা থানা পুলিশ উভয় পক্ষের ১৫ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ঘটনায় গত ২ দিনে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
অব্যাহত টেটাযুদ্ধে নিহতরা হলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আঃ হক সরকার সমর্থিত আমিরাবাদ গ্রামের আলতাফ মিয়ার ছেলে মানিক মিয়া (৪৫), সোনাকান্দী গ্রামের আরব আলীর ছেলে খোকন মিয়া (৩২) ও একই গ্রামের মঙ্গল মিয়ার ছেলে মো: মামুন মিয়া (২২)। নিহতদের পরিবারের দাবি পুলিশের গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পথে মোমেন নামে আরো এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এই নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাড়লো ৪ জনে।
এরই জের ধরে রোববার থেকে এই সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। ফলে উভয় পক্ষ পুণরায় দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলিবর্ষণের কথা স্বীকার করলেও তাৎক্ষনিকভাবে নিহতের তথ্য জানাতে পারেননি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্তÍ সংর্ঘষ অব্যাহত রয়েছে। রায়পুরা থানা পুলিশসহ নরসিংদী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এখনো চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে পুলিশ সূত্র জানায়।