রনজিত কুমার মিস্ত্রী, পিরোজপুর: পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র কর্তৃক পুরস্কার বিতরণী সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল রবিবার লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভা কক্ষে উক্ত বিদ্যালয়ের কার্য নির্বাহী পরিষদ, প্যারেন্টস টিচার্স এ্যাসোসিয়েশন ও ডিআরএইচ ইউজার্স কমিটি কর্তৃক এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু বিপদ ভঞ্জন নাগ মহাশয়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচীর সহ-সমন্বয়কারী জনাব মোঃ রিপন আহসান ঋতু, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী বাবু রনজিত কুমার মিস্ত্রী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাবু প্রভাষ কান্তি বিশ্বাস, সহ-প্রধান শিক্ষক, জনাব মোঃ দেলোয়ার হোসেন, ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক, বাবু রবিদাস গুহ, বাংলা শিক্ষক, বাবু সচীন্দ্র নাথ মজুমদার, হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষক, বাবু লোহিত কুমার বালা, শরীর চর্চা শিক্ষক, বাবু গোবিন্দ মজুমদার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষক, বাবু দিলিপ কুমার পান্ডে, ব্যবসায় শিক্ষক, বাবু সুধাংশু মিস্ত্রী, ইংরেজী শিক্ষক, শ্রীমতি খনা রানী বিশ্বাস, বাংলা শিক্ষক, শ্রীমতি লিমা সমদ্দার, সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক, বাবু বরেন্দ্র নাথ ঢালী, গণিত শিক্ষক, বাবু আশিষ মজুমদার, বিজ্ঞান শিক্ষক ও বাবু অনিমেষ সাধক, সহকারী লাইব্রেরীয়ান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলা ভাষা সাহিত্যে বহুমাত্রিক অবদানে সমৃদ্ধ করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৫তম মহাপ্রায়াণ দিবস আজ ২২ শে শ্রাবন। ১৩৪৮ সালের এই দিনে পৃথিবী থেকে চির প্রস্থান করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মহাপ্রায়ানেও হারিয়ে যাননি বিশ্বকবি। এর পর ৮ (আট) দশক অতিক্রম হয়েছে। বিলীন হয়েছে আনেক কিছু। রবীন্দ্র নাথ মৃত্যুঞ্জয়ী। বাঙ্গালীর প্রতিটি আবেগ আর সূ² অনুভূতিকে স্পর্শ করে আছেন। কবি গুরুকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানিয়ে বক্তারা বলেন, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা ও আত্মদানের ভেতর দিয়ে জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ। এখন চলছে তার নির্মাণের পর্ব। এই নির্মানকে সত্যিকার ভাবে অর্থময় করার জন্য আজ এ দেশে চাই অনেক সম্পন্ন মানুষ-সেই সব মানুষ যারা উচ্চ-মূল্যবোধ সম্পন্ন, আলোকিত, উদার, শক্তিমান ও কার্যকর-যারা জাতীয় জীবনের বিভিন্ন অঙ্গনে শক্তিমান নেতৃত্ব দিয়ে এই জাতিকে সমৃদ্বির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তাদের আজ পেতে হবে বিপুল সংখ্যায়-সারাদেশে, সবখানে। কেবল এককে দশকে নয়, সহস্রে লক্ষে। আর কেবল সংখ্যায় পেলেই চলবেনা, তাদের পেতে হবে একত্রিত ও সমবেতভাবে। তাদের গ্রথিত করতে হবে শক্তিশালী সংঘবদ্বতায়, উত্থান ঘটাতে হবে জাতীয় শক্তি হিসাবে। সারা দেশে সবখানে এই সব আলোকিত মানুষ গড়ে তোলার পরিবেশ সৃষ্টি করা জাতীয় শক্তি হিসাবে সংঘবদ্ধ করা এবং এরই পাশাপাশি জাতীয় চিত্তের সামগ্রীক আলোকায়ন ঘটানো বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মূল লক্ষ্য।
“আলোকিত মানুষ চাই” স্লোগানকে লালন করে ১৯৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। আর এই পীঠস্থানের স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষটি হলেন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র একাধারে একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্ব সাহিত্যের কার্যক্রম দেশ-বিদেশে নানাভাবে সমাদৃত হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্ব এবং অবদানের জন্য ২০০৮ সালে ইউনেস্কোর (টঘঊঝঈঙ’ঝ) সবচাইতে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার The Jan Amos Comenius Medal for the Year লাভ করেছে। কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ ২০০৪ সালে পেয়েছন এশিয়ার নোবেল খ্যাত Magsaysay International Award.