মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সৈয়দপুর শহরে আবারও ১২৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়েছে। সোমবার রাত প্রায় ৩ টার ন্যায় মঙ্গলবার রাতেও প্রায় সোয়া ২টায় শহরের শহীদ ডা. জিকরুর হক সড়ক সংলগ্ন ভয়াবহ ওই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এসব দোকান পুড়ে ক্ষতির পরিমাণ ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। পরিকল্পিতভাবে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকে ধারণা করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত প্রায় সোয়া ২টার দিকে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক সংলগ্ন কসমেটি, কাগজ কলম ও মসলার মার্কেটের পেপার হাউস থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় অগ্নিকান্ডের খবর মসজিদের মাইক দ্বারা ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে ব্যবসায়ী, মহল্লাবাসীসহ সৈয়দপুর, নীলফামারী, পার্বতীপুর, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর, জলঢাকা ও ডোমার থানার ফায়ার ব্রিগেডের সদস্যরা ঘটনাস্থল ছুটে এসে প্রায় ৯ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। সেই সাথে সৈয়দপুর সেনাবাহিনীর সদস্যরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বলে জানা যায়। তবে অগ্নিকান্ড এখনও অব্যাহত রয়েছে।
শহরবাসীর অভিযোগ, মাত্র ২ বছর আগেও সৈয়দপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নিজস্ব মালিকানাধীন বিশাল ধরনের সিঙ্গীপুকুরসহ রেলওয়ের কয়েকটি পুকুর ও ডোবা ছিল। এসব পুকুর ও ডোবার পানির কারণে অগ্নিকান্ডের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে প্রায় ২ হাজারেরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ এ শহরের বসবাসরত প্রায় ৪ লাখ মানুষ। কিন্তু গত ২ বছরের মধ্যে সিঙ্গীপুকুর সহ রেলের সকল পুকুর ও ডোবা পানিশূন্য হয়ে যাওয়ায় ফায়ার ব্রিগেডের সদস্যরা শত চেষ্টা করেও শহরবাসীকে অগ্নিকান্ডের কবল থেকে শতভাগ রক্ষা করতে পারছেন না।
সৈয়দপুর ফায়ার ব্রিগেডের প্রধান ওয়াদুদ হোসেন জানান, শহরের সিঙ্গীপুকুরসহ ডোবা ও জলাশয় ভরাট হয়ে পানিশূন্য হওয়ায় শত চেষ্টা করেও জনসাধারণসহ দোকানীদের অগ্নিকান্ডের কবল থেকে শতভাগ সেবা দিতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে যদি ওইসব পুকুর, ডোবা ও জলাশয়গুলো পুনরায় খনন করা হতো তাহলে একদিকে যেমন শহরবাসী ও ব্যবসায়ীরা অগ্নিকান্ডের হাত থেকে রক্ষা পেত। তেমনি শহরের ঐতিহ্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা পেত।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, পুকুর, দিঘী, ডোবা ও জলাশয় ভরাট হওয়ায় তিনিও ব্যথিত। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা না আসলে কিছুই করতে পারছেন না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন।