আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালে শনিবার ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। এখন পর্যন্ত ৪৪৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নেপালের প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশেও এ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, কাঠমান্ডুতে অসংখ্য অফিস ও বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং অনেক রাস্তাঘাট ফেটে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে।
শনিবার বেলা সোয়া ১২ টায় এ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে রাস্তায় বের হয়ে আসে। ভারতের উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা এমনকি বাংলাদেশেও ভূমিকম্প হয়েছে । মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, কাঠমান্ডুর ৮১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে অনেক বাড়িঘরের দেয়াল ভেঙে চুর্নবিচুর্ণ হয়ে গেছে এবং বাসিন্দারা তাদের বাড়ির বাইরে বের হয়ে আসে।
কাঠমান্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক সাংবাদিক বলেন, ‘রাস্তায় আমার চারপাশে বিভিন্ন বাড়িঘরের দেয়াল ভেঙে পড়ে। ওই সব বাড়িঘরের বাসিন্দারা উঠানে বের হয়ে আসে।’ কাঠমান্ডুর বাসিন্দা অনুপা শ্রেষ্ঠা বলেন, ‘সবকিছুই কাঁপছিল। আশপাশের অনেক কিছু ভেঙে পড়েছে। প্রধান সড়কের চারপাশে অনেক ভবনের দেয়াল বিধ্বস্ত হয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় স্টেডিয়ামের গেট বিধ্বস্ত হয়েছে।’
মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র দীনেশ আচার্য বলেন, ‘কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালানোই আমাদের মূল লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, অনেক বাড়িঘর ও ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। ইউএসজিএস প্রাথমিকভাবে ভূমিকম্পের তীব্রতা ৭ দশমিক ৫ বললেও পরে ৭ দশমিক ৯ বলে জানায়। পর্যটন শহর পোখারার ৬৮ কি. মি. পূর্বে ও সমুদ্র পৃষ্টের ১৫ কি. মি. গভীরে এ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভূ-কম্পনগুলো ৩০ সেকেন্ড থেকে দুই মিনিটের মধ্যে অনুভূত হয়। নয়াদিল্লীসহ ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভূ-কম্পন অনুভূত হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘আমরা আরো তথ্য জানার চেষ্টা করছি এবং দেশে ও নেপালের ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর জন্য কাজ করছি।’ নয়াদিল্লীতে এএফপি’র কার্যালয় দুইবার খালি করা হয়।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের মহাপরিচালক লক্ষ্মণ সিং রাঠোর বলেন, ভারতের উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ভূ-কম্পন অনুভূত হয়। সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয় উত্তর প্রদেশ ও বিহারের পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিমবঙ্গে।’ তিনি আরো বলেন, প্রথমবার ভূমিকম্পের ২০ মিনিট পর একই কেন্দ্রস্থলে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার দ্বিতীয় ভূমিকম্প আঘাত হানে।