নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টা পার হলেও মাওয়ার তিন নম্বর রো রো ফেরিঘাট সচল হয়নি। বৃহ¯পতিবার বিকালেও মন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা নদীতে শুধু ১ নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। এতে নদীর উভয় পারে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ যান। বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক এ কে এম আশিকুজ্জামান চৌধুরী বিকালে বলেন, ২ নম্বর ঘাটে পন্টুন স্থাপন চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে এই ঘাট সচল হতে আরো কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। তিনি বলেন, “স্পিডবোট ঘাটের কাছে নতুন করে ৩ নম্বর ঘাট স্থানান্তরের কাজ শুরু হলেও নদী উত্তাল থাকায় তা বন্ধ রয়েছে। এই ঘাট স্থাপনে আরও ১০/১৫ দিন লেগে যেতে পারে। তবে ২ নম্বর ঘাটে রো রো ফেরির চলাচল উপযোগী করে আপাতত এভাবেই চালিয়ে নেয়া হবে।” বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক সিরাজুল হক বলেন, “প্রচণ্ড স্রোতের কারণে পাঁচটি ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আর রো রো ফেরি ঘাট না থাকায় রো রো ফেরি তিনটি চলতে পারছে না। এসব কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে।” ফেরিগুলো দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় মাওয়া থেকে কাওড়াকান্দি পৌঁছলেও ফিরতে চার থেকে সাতঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে বলে জানান তিনি। মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথে চলাচলরত ১৬টি ফেরির মধ্যে রো রো ফেরিঘাট পদ্মায় বিলীন হওয়ায় রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, শাহ আলী ও আমানত শাহ চলাচল করতে পারছে না। প্রচণ্ড স্রোতে বন্ধ রয়েছে আরও পাঁচটি ফেরি। বুধবার সকাল ৯টার দিকে মাওয়ায় পদ্মার ভাঙন পরিদর্শন করে নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিলীন হওয়া ঘাট চালু করা হবে। ঘোষণার পর ভাঙনে ডুবে যাওয়া ৩ নম্বর ঘাটের র্যা¤পটিকে বুধবার সন্ধ্যার দিকে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম টেনে তুলেছে। ঘাটের কাজও চলছে তবে চালু করা যায়নি। ভাঙনের মুখে থাকা ২ নম্বর ফেরিঘাট ও এর আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। মাওয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির মেরিন অফিসার মো. শাহজাহান জানান, ২ নম্বর ঘাটে মেরামত কাজ করা হচ্ছে। ওই ঘাটের পাশেই আরেকটি র্যা¤প বসানো হচ্ছে। এতে রো রো ফেরিগুলো চলতে পারবে। ৩ নম্বর ফেরিঘাট চালু না হওয়ায় এবং নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। তাই বৃহস্পতিবারও মাওয়া ও কাওড়াকান্দি ঘাটের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট রয়েছে। বিশেষ করে পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো দুই থেকে তিন দিন ধরে দু’পাশের ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। মাওয়া ঘাটের চৌরাস্তা থেকে ট্রাকের সারি দুই কিলোমিটার ধীর্ঘ হয়ে শ্রীনগর উপজেলার দোগাছি পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। কাওড়াকান্দি ঘাটে এই লাইন আরো দীর্ঘ। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বলেন, “মানিকগঞ্জ থেকে একটি পন্টুন আনা হয়েছে। সেটা ২ নম্বর ঘাটে বসানোর কাজ চলছে। বসাতে পারলে ঘাটের চাপ কিছুটা কমবে।”