উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: নড়াইলের কালিয়ায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়ে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। গত বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি গ্রুপের ১ জন আহত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং আরও ভয়াবহ সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত কালিয়া পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাড. সুবাস চন্দ্র বোস ও সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু পক্ষের মেলজার ভূঁইয়া গ্রুপ ও নড়াইলে ১ আসনের এম.পি কবিরুল হক মুক্তি সমর্থিত চাঁচুড়ী ইউ.পি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছিল। কালিয়া পৌরসভা নির্বাচনে এম.পি মুক্তি ও চাঁচুড়ী ইউ.পি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কাজ করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে। অন্যদিকে জেলা আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেলজার ভূঁইয়া গ্রুপ নৌকার পক্ষে কাজ করায় নির্বাচনের পর থেকে তাঁর পক্ষে পিলু ভূঁইয়া, মিরাজ ভূঁইয়া, ইবাদ ভূঁইয়া, টুলু মোল্যা ও মুকুল মোল্যাসহ ৩০-৪০ জন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ এর নেতা-কর্মী বাড়ি ছাড়া রয়েছে। এরই জের ধরে বুধবার সকালে পিলু ভূঁইয়াসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাদের বাড়িতে ফিরে আসছিল। পথিমধ্যে বনগ্রাম বাজারে পৌঁছালে লুৎফর চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই বিল্লাল এর সাথে দেখা হয়। বিল্লাল তাঁদের বাড়ি যেতে বাঁধা দেয় এবং আঘাত করার জন্য এগিয়ে আসে। এই সময় আঘাত প্রতিহত করতে গেলে বিল্লাল (৪০) আহত হয়। এরপর কলেজ ছাত্র রাজু হত্যা মামলার হুলিয়া প্রাপ্ত প্রধান আসামি ও বহু অপকর্মের হোতা চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানের ভাই মশিয়ার রহমানের নের্তৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ গুলি বর্ষণ করতে করতে এগিয়ে আসে। এ সময় পিলু ভূঁইয়া কোন উপায়ান্তর না দেখে তাঁদের লোকজন নিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এরপর মশিয়ার রহমানসহ সংঘবদ্ধ গ্রুপটি চাঁচুড়ী ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল হক শেখের বাড়িতে হামলা করে। হামলার সময় এনামুল হক শেখের ঘর-বাড়ি এবং আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করে। এমনকি স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা লুট করে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার। এছাড়াও বাংলাদেশ প্রেস এর নড়াইল জেলা প্রতিনিধি মোঃ হিমেল মোল্যার বাড়িতেও হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর চালায় সংঘবদ্ধ গ্রুটি। সরেজমিনে দেখা যায়, ভাংচুরের পরে অবশিষ্ট মালামাল লুট করা হয়েছে। একই সময়ে মেলজার ভূঁইয়া, ইবাদ ভূঁইয়া, বাবুল মোল্যা ও সবুর মুন্সীর বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে মশিয়ার বাহিনীর সদস্যরা। ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল হক শেখের পিতা রাজা শেখ জানান, সকালে তাঁর বাড়ির লোকজন সবাই ঘুমাচ্ছিল। কিছু বুঝে উঠার আগেই বাড়ির দরজা, জানালা, আসবাবপত্রসহ যাবতীয় জিনিসপত্র ভেঙেচুরে তছনছ করে দেয় দুর্বৃত্তরা। মেলজার ভূঁইয়া ও ইবাদ ভূঁইয়ার বাড়ির লোকজন আরও জানান, পুলিশের সামনেই হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, দুর্বৃত্তপনা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কঠোর হস্তেই সকল অপরাধীকে দমন করা হবে।