পাবনায় অভাবের সংসারে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, স্বামীর আত্মহত্যা

নিউজ ডেস্ক:
অভাবের সংসার। হাতে কাজও নেই। তাই অর্থাভাবে বাজার করতে পারেননি শহিদুল ইসলাম (৪০)। স্ত্রী বুলু খাতুনও তাকে খাবার দেননি কয়েকদিন। উপায় না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার বাবার বাড়ি সংসার চালানোর জন্য টাকা আনতে যান বুলু খাতুন। রাতে ফিরে দেখেন স্বামী ফাঁসি নিয়েছেন। ঝুলে আছেন ঘরের চালে।

হৃদয় বিদারক এ ঘটনা ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বাঙ্গালা (স্কুলপাড়া) গ্রামে। মৃত শহিদুল ওই গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে এবং পেশায় দিনমজুর ছিলেন।
তাদের এক প্রতিবেশী জানান, এমন কোনো দিন ছিল না যে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়নি। শহিদুলের চাচা আলেক হোসেন বলেন, সাংসারিক বিবাদের কারণে শহিদুলকে তার বউ গত এক সপ্তাহ ধরে ভাত দেয়নি। গত বৃহস্পতিবারও স্ত্রীর কাছে খাবার চাই। কিন্তু দেয়নি। উল্টো বকাবকি করেছে। মাঝে মধ্যে বউই ভাতিজাকে মারধর করত। এ বাড়ি ও বাড়িতে যা পেয়েছে তাই খেয়েছে।

তবে শহিদুলের স্ত্রী বুলু খাতুন জানান, তাদের তিন মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ের বয়স এক বছর। অভাবের সংসারে তার স্বামী বাজার করা বা বাচ্চার জন্য দুধ পর্যন্ত কিনতে পারেননি। তার স্বামী ঠিকমতো কাজ না করতে পারায় সংসারও চালাতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত তাকে বলেছিলেন বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা আনার জন্য। ওই টাকা দিয়ে তিনি ভ্যান কিনতে চেয়েছিলেন। স্বামীর কথামতো তিনি গত বৃহস্পতিবার বাবার বাড়ি টাকা চাইতে গিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফিরে দেখেন, স্বামী ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘরের চালের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান জানান, পুলিশ খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতেই লাশ উদ্ধার করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পাবনার সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment