বরিশাল প্রতিনিধি:
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা এবং উত্তেজনাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বরিশাল জেলা হেযবুত তওহীদের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় কর্মী সম্মেলনটি শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদ সমাবেশের রূপ নেয় এবং বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। কর্মী সম্মেলনটি বন্ধ করার জন্য চরমোনাই পীরের অনুসারীদের সন্ত্রাসী তৎপরতার ফলে শনিবার সকাল থেকেই বরিশালে উত্তেজনাময় পরিবেশ বিরাজ করছিল।
বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি কর্তৃপক্ষে অনুমোদন নিয়ে শনিবার বিকেল ৩টায় একটি কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে বরিশাল জেলা হেযবুত তওহীদ। কিন্তু গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলন তথা চরমোনাই পীরের অনুসারী একদল ধর্মব্যবসায়ী মাওলানা মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসনের উপর সম্মেলনটি বন্ধ করার জন্য অন্যায়ভাবে চাপ দিতে থাকে। তারা প্রশাসনকে হুমকি দেয় যে, সম্মেলন হলে এখানে তারা অনুষ্ঠানস্থলে হামলা চালাবে। পরিণামে যে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটে গেলে তার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। যথারীতি জঙ্গিবাদী, উগ্রপন্থী, ধর্মব্যবসায়ী শক্তির সামনে মাথা নত করে প্রশাসন। তারা আইন মান্যকারী আন্দোলন হেযবুত তওহীদের নেতাকর্মীদেরকে শিল্পকলা একাডেমিতে না যাওয়ার অনুরোধ জানাতে থাকে।
এছাড়াও প্রশাসনকে হুমকি প্রদানের পাশাপাশি উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি সকাল থেকে অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেয়। হেযবুত তওহীদের সদস্যরা যেন সম্মেলনে আসতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। কিন্তু ধর্মব্যবসায়ীদের অন্যায্য অনৈতিক বে-আইনী অপতৎপরতার সামনে মাথা নত না করে পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বরিশাল জেলা হেযবুত তওহীদ। প্রতিবাদে মুখর হয়ে জেলার শত শত নেতাকর্মী বিকেল তিনটার সময় রাজপথে নেমে আসেন। প্রথমে তারা বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সম্মুখে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধন থেকে বক্তব্য প্রদান করেন, হেযবুত তওহীদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের বিভাগীয় আমির ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ এবং বরিশাল বিভাগীয় আমির আল আমিন সবুজ।
বক্তারা ধর্মব্যবসায়ী চরমোনাই গোষ্ঠীর এই সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। তারা বলেন, “ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী যতই ষড়যন্ত্র করুক তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হবে। তারা হেযবুত তওহীদের কণ্ঠ রোধ করতে চায়। তারা আদর্শিকভাবে আমাদের সঙ্গে না টিকতে পেরে এখন পেশীশক্তির আশ্রয় নিয়েছে। তারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মিথ্যা গুজব রটনা করে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে না পেরে অবশেষে প্রশাসনের উপর অবৈধভাবে চাপ সৃষ্টি করেছে। এটা এক প্রকার গুণ্ডামি। তারা অপরাজনীতিতে লিপ্ত। অপরাজনীতিতে যেমন মিথ্যা চলে, গুজব চলে অন্যের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ চলে, হেযবুত তওহীদের ক্ষেত্রেও তারা সেই অপকৌশলই অবলম্বন করেছে।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “অন্তত হেযবুত তওহীদের বেলায় এ ধরনের কোন অপতৎপরতায় তারা সফল হবে না। তারা যত বিরোধিতা করবে, বরিশালের মাটিতে এ সত্যনিষ্ট আন্দোলন আরো দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করবে। ধর্মব্যবসায়ীদের সকল ষড়যন্ত্র অচিরেই ব্যর্থ হবে। হেযবুত তওহীদ একটি আইন মান্যকারী আন্দোলন। হেযবুত তওহীদ কোন ধরনের উসকানিতে পা দেয় না। হেযবুত তওহীদ কোন ধরনের বেআইনী কর্মকাণ্ডে বিশ্বাস করে না। হেযবুত তওহীদ শান্তিপূর্ণ উপায়ে আদর্শ প্রচারে বিশ্বাসী।”
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু হয়ে বরিশাল সদর রোড প্রদক্ষিণ করে জেল খানা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। হাজার হাজার মানুষ এ বিক্ষোভ মিছিলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সংহতি প্রকাশ করে।