লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার নারী কাউন্সিলর রাহিমা বেগমের বিরুদ্ধে সালিসি বৈঠকে ডেকে নিয়ে পারভীন বেগম নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পরে কাউন্সিলর নিজেই হামলার শিকার হন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
শুক্রবার (১২ মে) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর পৌরসভার (১৫ নম্বর ওয়ার্ড) পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার ফারুক ড্রাইভারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করে থানা হেফাজতে রেখেছে পুলিশ। আহত রাহিমা ও পারভীন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আটকরা হলেন- দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র ফারদিন ইয়াসিন অনিক, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র মেহেদী হাসান ও নিশাদ।
রাহিমা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার বাবরের স্ত্রী। আহত পারভীনের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার আবুধাবি প্রবাসী ফারুক হোসেনের স্ত্রী।
আহত পারভীনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১৭-১৮ দিন আগে পাশ্ববর্তী এক নারীর সঙ্গে পারভীনের ঝগড়া হয়। ওই নারী কাউন্সিলর রাহিমার কাছে বিচার দেয়। এতে হঠাৎ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাহিমা তাকে লিপি নামে এক নারীকে দিয়ে সালিসের কথা বলে ডেকে নেয়। কিন্তু এর আগে সালিসি বৈঠকের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। লিপির বাসায় গেলে ছেলে ও ভাগিনাসহ পারভীনকে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে দরজা আটকে দেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন কথা নিয়ে রাহিমা ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে ও ভাগিনার সামনেই তাকে চড়-থাপ্পড় দেয়। একপর্যায়ে দেওয়ালের সঙ্গে পারভিনের মাথায় সজোরে আঘাত করে রাহিমা। এটি সহ্য করতে না পেরে পারভীনের ছেলে ফারদিন ইয়াসিন অনিক ও ভাগিনা মেহেদি হাসান বাধা দেয়। এনিয়ে ঘটনাস্থলে হাতাহাতি হয়। পরে রাহিমা ফোন দিয়ে লোকজন নিয়ে এসে ফের পারভীন, তার ছেলে ও ভাগিনাকে মারধর করায়। এতে বাধা দিতে গেলে পারভীনের বাবা কফিল উদ্দিন, ভাই পারভেজ হোসেন, বোন লিপি আক্তারকেও মারধর করেছে রাহিমার লোকজন।
রাহিমার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক নারীর সঙ্গে ঝগড়ার ঘটনায় পারভীনকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। এরপরই পারভীনের লোকজন এসে রাহিমার ওপর হামলা করে। এতে পারভীন মাথায় আঘাত পায়। বর্তমানে তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মারামারির ঘটনায় দু’জন নারী হাসাপাতালে ভর্তি আছেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, ঘটনাটি শুনেছি। এ ঘটনায় বিস্তর তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসিকে বলা হয়েছে।