তপন কুমার রায়, বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের শিক্ষাঙ্গনে আনুষ্ঠানিক যাত্রার ৫ম বছরে পদার্পন। আজ ৮ ই জানুয়ারী ২০১১ সালের এই দিনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন ও বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেন। রংপুর অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন করতে ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ৬টি বিভাগে ৩০০ শিক্ষার্থী, ১২ জন শিক্ষক,৩ জন কর্মকর্তা ও ৯ জন কর্মচারী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। শুরুতে রংপুর শহরের ডিসি মোড়ের সন্নিকটে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের পরিত্যক্ত কয়েকটি কক্ষ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ক্যাডেট কলেজের ও কারমাইকেল করেজের মাঝে ৭৫ একর জামির উপর এখন বিশাল পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস। সবকিছুর দ্বারপ্রান্তে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ২১ টি বিভাগে প্রায় ৬ হাজারের সাথে যোগ হতে যাচ্ছে নতুন শিক্ষার্থী সংখ্যা, ১৩৯ জন শিক্ষক, খাতা কলমে ৬৭৮ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর সমন্বিত রুপ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৩ জন উপাচার্য স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। প্রথম উপাচার্য ড. এম এ লুৎফর রহমান স্থলাভিষিক্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকে ইতিহাস মন্ডিত হলেও রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিগত যে কারনেই হোক না কেন শীতকালের অতিথি পাখির ন্যায় আসা ও চলে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কাজ করতে পারেননি।
দ্বিতীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল জলিল মিয়া ২০০৯ সালের ৭ই মে যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্রুত অবকাঠামোগত উন্নয়নের সাথে সাথে দুর্নীতির সুগম পথেরও উন্নয়ন সাধিত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সবকিছু প্রশংসনীয় ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তুী ২০১২ সালের শেষের দিকে এই উপাচার্যের দুর্নীতির মাত্রা প্রকাশ পেলে শুরু হয় দুর্নীতি বিরোধী মঞ্চের আন্দোলন। যার চুড়ান্ত ফলাফল পাওয়া যায় ২০১৩ সালের ৫ই মে।সরকার কর্তৃক অপসারিত হয় এই দুর্নীতি পরায়ন উপাচার্য।
৬ ই মে ২০১৩ সালে স্থলাভিষিক্ত হন বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী।সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবহির্ভূত পূর্বের উপাচার্যের নিয়োগ দেওয়া অতিরিক্ত জনবল, শূণ্য ফান্ডসহ এক বোঝা সমস্যা। বর্তমান উপাচার্যের কোন ধরনের অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন দেখা না গেলেও পূর্বের একগাদা সমস্যার সমাধানে একে একে পূর্ণতা পায়। পূর্বে সেই সব সমস্যার ফলাফলও আজ এই চলমান আন্দোলন।সব চড়াই উতরাই পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস আজ এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের হাতছানি। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা শীঘ্রই যেন তিন দফার অবকাঠামোগত ২য় ও ৩য় দফার কাজ শুরু হয়।
স্থায়ী ক্যাম্পাসের ৫ম বছরে পদার্পনে বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী বলেন, ২০১১ সালের আজকের এই দিনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্থায়ী ক্যাম্পাস উদ্বোধন করে একটি ঐতিহাসিক দিনে পরিণত করেছেন। আজকের এই দিনে আমি প্রত্যাশা করি আমরা সবাই জননেত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাচেতনাকে সামনে রেখে এই বিশ্ববিদ্যালকে একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার।