ফুলছড়িতে আরবি পড়তে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের শিকার

রিপন হাসান গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনেরপাড়ায় আরবি পড়তে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক একাধিবার ধ’ষর্ণের শিকার হয়েছে স্থানীয় এক কিশোরী।

কঞ্চিপাড়া এম এ ইউ একাডেমিতে ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী সে । এর পাশাপাশি মদনে পাড়া মুসলিম একাডেমি নূরানী মাদ্রাসায় প্রতিদিন বিকাল বেলা আরবি পড়ে।

মাদ্রাসায় পড়াকালীন সময়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ জোবায়ের হোসেন মেয়েটিকে বিভিন্ন প্রকার লোভ লালসা দেখায় এবং মোবাইল কিনে দেওয়ার কথা বলে।

গত ২১.১১.১৯ইং বিকাল বেলা মেয়েটি প্রতিদিনের মত বর্ণিত নূরানী মাদ্রাসায় যায়। পড়া শেষ হওয়ার পরে মাদ্রাসার ছুটি হলে অন্যান্য ছেলেমেয়েরা যে যার মতো বাড়ি চলে যায়। কিন্তু অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দেবে বলে যেতে দেয় না এবং তার হাত ধরে মাদ্রাসার ভিতরে নিয়ে যায়। তারপর মাদ্রাসার দরজা বন্ধ করে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটির চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মোঃ জোবায়ের হোসেনকে হাতে না হাতে ধরে ফেলে।

স্থানীয় এলাকাবাসী মেয়ের বাবাকে সংবাদ দিলে মেয়ের বাবা দ্রুত পরিবারের লোকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। কিন্তু তার আগেই অভিযুক্ত জোবায়ের কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। অতঃপর মেয়ের বাবা ঘটনার বিষয়গুলো স্থানীয় লোকজনদেরকে অবহিত করে বিচার দাবি করলে স্থানীয় লোকজন ঘটনার আপোশ মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক জোবায়ের আপস-মীমাংসা না মেনেই পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ভু’ক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে হাফেজ মোঃ জোবায়ের হোসেন (৩৫) এর বিরুদ্ধে গত ২৫.১১.১৯ইং তারিখে ফুলছড়ি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন(সাং ০৩) এর ৯(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা নং -০৮ তাং ২৫.১১.১৯ ।

অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ মোঃ জোবায়ের হোসেন গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামের মৃত আফছার আলীর ছেলে।

এ বিষয়ে মুসলিম একাডেমীর পরিচালক মোঃ মকবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি শুক্রবার বিকাল পাঁচটায় অভিযোগের কথা শুনি এবং সন্ধ্যায় আমি অভিযুক্ত হাফেজ মোঃ জোবায়ের হোসেনকে ডাকি এবং বলি যে তোমার বিরুদ্ধে এমন একটি জঘন্য অভিযোগ আমি পেয়েছি এরপর তোমাকে আর এক মুহূর্তের জন্যও এখানে রাখতে চাই না। এই বলে তাকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী ফুলছড়ি থানার এস আই আব্দুল ওয়াহেদ বলেন- হোসেনপুরে একটি মেয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং আসামির বাড়িতে অনেকবার গেছি কিন্তু আসামীকে পাওয়া যায় নি, ঘরে তালা দিয়ে বউ বাচ্চা সব নিয়ে পালিয়েছে।

এ ব্যাপারে ফুলছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাউছার আলী বলেন, গত সোমবার রাত ৯.৩০টায় ভুক্তভোগী মেয়েটির পিতা বাদী হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষককে আসামী করে থানায় একটি মা’মলা দা’য়ের করেছেন।

ভুক্তভোগীর পরিবার বলেন- মামলা করার ২০ দিন হয়ে গেলেও এখনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারে নাই পুলিশ। ধর্ষক হাফেজ জোবায়েরকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসি দেওয়া দাবী পরিবারের।

Comments (0)
Add Comment