শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বেড়াকুটি গ্রামে এক মেয়ে জমি থেকে হাস তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় ধর-ধর বলার ঘটনায় গত ২১ আগষ্ট দুই যুবককে গাছে বেঁধে পেটানোর ঘটনা ঘটেছে। এতে হেলাল(২০) ও আলিমুল(২১) গুরুত্বর আহত হলে তাদের কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই যুবক বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
এদিকে বেলাল খাঁন নামে ফেসবুক আইডিতে গত ২৪ আগষ্ট রাত ১০ টায় দুই যুবককে নির্মমভাবে মারপিটের একটি ভিডিও ফুটেজ আপলোড করে। এখানে বলা হয় এক মেয়েকে ইয়ার্কি করে ধর, ধর, ধর বলার অপরাধে উপস্থিত জনতার সামনেই একজনকে পিটিয়ে হত্যা করলো। এরা কি মানুষ নাকি পশু। ঘটনা বেড়াকুটি কাজিমোড়। কাশিপুর ইউপি, থানা ফুলবাড়ী, জেলা কুড়িগ্রাম। ভিডিওটি শেয়ার করে পশুগুলোর শাস্তি নিশ্চিত করুন। ভিডিওটি ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ জনগণের মাঝে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় হেলালের পিতা ফজলুল হক বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় গত ২৪ আগষ্ট ৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। ২৫ আগষ্ট কাশিপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ আসামীদের শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার শিকার হেলাল ঘটনার দিন বিকেলে তার ফুফাতো ভাই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী আলিমুদ্দিনকে সাথে নিয়ে মনির ভিটা গ্রামের মামাতো ভাই আব্দুস ছালামের বাড়ী থেকে নিজ বাড়ীতে ফিরছিল। পথিমধ্যে কাজির মোড় ও ঘুঘুর হাটের মাঝামাঝি হেলালদের চাষকৃত জমি থেকে একটি মেয়ে হাস নিয়ে যাওয়ার সময় হেলাল ধর-ধর বলে চিৎকার করে। মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বাড়ীর লোকজন লাঠিসোঠা নিয়ে হেলাল ও তার ফুফাতো ভাই আলিমুদ্দিনকে ধাওয়া করে ধরে এনে গাছে বেঁধে পেটায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য কালাম তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
কিন্ত ফুলবাড়ীর কাশিপুরে দুই যুবককে পেটানোর ঘটনা ঘটলেও সেদিন মোবাইলে ধারন করা ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে বেলাল খানের ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিও ফুটেজের কোন মিল নেই এবং কারো মৃত্যু ঘটেনি।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত হেলালকে ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিওটি দেখানো হলে সে জানায়, আমাদেরকে গাছে বেঁধে পেটানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু এ ভিডিওটি আমাদের নয়।
এব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা সরে জমিনে তদন্ত করে দেখেছি ঘটনাটি সত্য। হেলালের পিতা ফজলুল হক বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত আব্দুল কাদের, আবুল কালাম ও শহিদুল ইসলামসহ ৪ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে। আমরা আসামীদের ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বেলাল খান নামের আইডিতে ফেসবুকে আপলোড করা ফুটেজ সর্ম্পকে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের সার্কেল এসপি সনাতন চক্রবর্তী জানান, ঘটনাটি তেমন গুরুত্বর নয়। ভিকটি দুই যুবক সুস্থ আছে। তাদেরকে তো হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়ার কথা।