ফেইসবুকে ঝড়: গাবতলীর কথিত সাংবাদিক মোজাফফর কারাগারে, এলাকায় স্বস্তি

 

কথিত সাংবাদিক মোজাফফর

সালজার রহমান সাবু, বগুড়া: বগুড়ার গাবতলীর কথিত সাংবাদিক মোজাফফর রহমান ব্লাক মেইল করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাদাজি মামলায় কারাগারে যাওয়ার খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রকাশিত হওয়ার পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের মধ্য স্বস্তি ফিরে এসেছে। জানা গেছে, মোজাফফর এতোটাই প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করেছে তা সে কারাগারে যাওয়ার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভূক্তভোগীরা। বেশী প্রতারণা করেছে চাকুরী দেয়া এবং ইন্সুরেন্স (বীমা) কোম্পানীর নামে।
মোজাফফর রহমান কারাগারে যাওয়ার খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট করা হলে বহু মানুষ তাকে চাঁদাবাজ, প্রতাররক, বাটপার, দালাল, ভুয়া সাংবাদিকসহ তার সর্ম্পকে আরো অনেক মন্তব্য করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। প্রায় ২৪টি মন্তব্য পড়েছে যাতে তার আসল চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে। যারা মন্তব্য করেছেন তারা অনেকেই তার প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। আবার তার বিরুদ্ধে আরও মামলা করার কথাও ভাবছেন অনেকে।
মোজাফফর রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ব্লাক মেইল করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজি মামলায় গত ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু রায়হান এর আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে আদালতের দায়িত্বরত পুলিশ মোজাফফরকে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে কারাগারে নিয়ে যায়।
এছাড়া ওই মামলায় সবুজ নামের আরেক অভিযুক্তর জামিন নামঞ্জুর করে তাকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। মোজাফফ গাবতলীর দুর্গাহাটা ইউনিয়নের বাইগুনী কালুডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এখন পর্যন্ত তার পরিবারের কেউ আদালতে জামিনের আবেদন করেনি বলে কোর্টের জিআরও অফিস সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১০মে/১৬ বিকেলে বন্ধুত্বের সুবাদে ধরে গাবতলীর নাড়ুয়ামালা রেলওয়ে ছোট ব্রিজ সংলগ্ন টুকু প্রামানিকের বাড়িতে বেড়াতে যান পৌরসভার জয়ভোগা গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৬২)।
সন্ধ্যারাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েক যুবক হঠাৎ টুকুর বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধ নজরুলকে মারপিট করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই সময় বাজপাখির মতো ওই বাড়িতে দ্রুত উড়ে আসে দৈনিক কালের খবর পত্রিকার পরিচয়দানকারী সাংবাদিক মোজাফফর রহমান।
কথিত এই সাংবাদিক টুকুর নাতনী পিয়া (১২) ও ৬২ বছরের বৃদ্ধ নজরুলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পাশাপাশি দাড় করিয়ে বেশ কয়েকটি ছবি তোলে এবং পত্রিকায় ছবিসহ মানহানিকর খবর প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এতে বিস্মিত হয়ে তীব্রভাবে প্রতিবাদ করেন নজরুলসহ বাড়ির অন্যান্য লোকজন।
তখন কথিত সাংবাদিক মোজাফফরসহ ওই যুবকরা দ্রুত সটকে পড়ে। এ ঘটনায় গত ১৩মে/১৬ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে রানা, সবুজ, আলামিন ও কথিত সাংবাদিক মোজাফফরকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৮।
উক্ত মামলায় ১৪জুলাই/১৬ আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে মামলার অভিযুক্ত সবুজ ও কথিত সাংবাদিক মোজাফ্‌ফরকে জেল হাজতে (কারাগারে) পাঠিনো নির্দেশ দেন।

Comments (0)
Add Comment