এম আর মিলন (ব্যুরো প্রধান চট্টগ্রাম) :
বিদেশ-ফেরতদের সুরক্ষা ও কল্যাণে রেফারেল সেবার মানোন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত আজকের জেলা রেফারাল মেকানিজম বিষয়ক কর্মশালায় উঠে আসে এ অঙ্গীকার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত ইমপ্রুভড সাসটেইনেবল রিইন্টিগ্রেশন অব বাংলাদেশি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস (প্রত্যাশা-২) প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে ২০২৫) বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণে কার্যকর রেফারেল মেকানিজম গড়তে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সুব্রত হালদার। নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা করে বিদেশ-ফেরতদের জন্য বিভিন্ন সংস্থার যে সেবাগুলো রয়েছে তা সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফেরত আসার পর আমাদের ভাই-বোনেরা জানতেই পারেন না যে তাদের জন্য কী কী সরকারি-বেসরকারি সুবিধা আছে। আমাদেরকে তাদের সচেতন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে রিইন্টিগ্রেশন ও কার্যকর রেফারেলের গুরুত্ব নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সিনিয়র মানেজার সাজ্জাদ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। ২০১৩ সালে ব্র্যাক সম্ভাব্য অভিবাসী ও বিদেশ-ফেরতদের নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতন করার মাধ্যমে চট্টগ্রামে কাজ করতে শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে প্রত্যাশা-২ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামে বিদেশ-ফেরতদের টেকসই পুনরেকত্রীকরণে ব্র্যাক কাজ করছে।’ টেকসই পুনরেকত্রীকরণে রেফারেল সেবার গুরুত্ব উল্লেখ করে চট্টগ্রামের জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র চাকমা বলেন, ‘আমাদের আশেপাশের বিদেশ-ফেরত অভিবাসীদের দেশে ফিরে আসার পর সরকারি-বেসরকারি সেবা সম্পর্কিত তথ্য পৌছাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।
চট্টগ্রামের বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ পলাশ কুমার বড়ূয়া বলেন, ‘বিদেশ ফেরত অদক্ষ মানুষদের টেকসই পুনরেকত্রীকরণের জন্য নানা দক্ষতামূলক কার্যক্রমে সংযুক্ত করতে হবে।’ চট্টগ্রামের মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ আশরিফা তানজীম বলেন, ‘বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অনেক নারী কাজের জন্য যাচ্ছেন কিন্তু তাদের মধ্যে দক্ষতা অর্জনে অনাগ্রহ দেখা যায়। এই বিষয়ে আমাদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
সভা শেষে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফেরত প্রত্যাশা-২ প্রকল্পের সেবাগ্রহীতা সাকিব উদ্দিনকে মুদি ব্যবসা শুরু করতে ৭৬,৮৩০ টাকার চেক প্রদান করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত হালদার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক জেলা সমন্বয়ক মোঃ ইনামুল হাসান। এছাড়াও উন্মুক্ত আলোচনায় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা রেফারেল সেবাকে কাযর্কর নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আবুল বাসার, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি ডাঃ মোঃ নুরুল হায়দার, ওয়েলফেয়ার সেন্টারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মোঃ এনায়েত উল্লাহসহ বিদেশ-ফেরত প্রবাসীরা, প্রবাসবন্ধু ফোরামের সদস্যবৃন্দ, কারিগিরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষক ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।