রায়হানুল ইসলাম, বগুড়া: বগুড়া গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ে জঙ্গি বিরোধী মানববন্ধন, আলোচনাসভা ও র্যালি’র আয়োজন করা হয়েছে।সোমবার সকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুর্গাহাটা ডিগ্রি কলেজে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ মোজাফ্ফর হোসেনের নেতৃত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ ফজলে বারী নয়ন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহার আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিল্টন হোসাইন, সাধারন সম্পাদক রোহানুল হাওলা রোহান। পরে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে গাবতলী উপজেলা আমীর সালজার রহমান সাবু’র সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় আমীর মসীহ উর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের রাজশাহী বিভাগীয় আমীর জোবায়ের আহম্মেদ নুহু, কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ ফজলে বারী নয়ন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহার আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিল্টন হোসাইন, সাধারন সম্পাদক রোহানুল হাওলা রোহান, দুর্গাহাটা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বকুল মন্ডল,সাধারন সম্পাদক আবু আনার্ছ,সাংগঠনিক সম্পাদক অনিক, যুবলীগ নেতা নূর ইসলাম নূর প্রমুখ।
পৃথক অনুষ্ঠানে দুর্গাহাটা ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার উদ্যোগে র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনাসভায় যোগ দেন হেযবুত তওহীদের সদস্যরা। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিয়াকত আলী’র সভাপতিত্বে উক্ত সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় আমীর মসীহ উর রহমান। এসময় তিনি বলেন, সামপ্রতিক টার্গেট কিলিং ও গুলশান হামলাসহ বেশ কিছু নৃশংস ঘটনায় ইসলাম ধমের্র নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা মনে করি এই আক্রমণ শুধু আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের বিরম্নদ্ধে নয় বরং সরাসরি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে। বিশ্বময় জঙ্গিদের কাজের পরিণতিতে বিশ্ববাসীর মনে ইসলাম সম্পর্কে একটা খারাপ ধারণা ও ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। শত শত ইসলামবিদ্বেষী মানুষ ইসলামের বিরম্নদ্ধে ক্রমাগত অপপ্রচার চালিয়েও যে ক্ষতি করতে পারে নি, এই জঙ্গিবাদীরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে, জবাই করে মানুষ হত্যা করে ইসলামের বহুগুণ বেশি ক্ষতিসাধন করেছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আল্লাহ রসুলের ইসলাম আর বর্তমানে ইসলামের নামে যেটা চলছে সেটা এক নয়, বরং সম্পূর্ণ বিপরীত। সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে এখন অবশ্যই ইসলামের নামে চলা সকল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। আল্লাহ হক, রসুল হক, দীন হক, কেতাব হক, রসুল যে জাতি গঠন করেছিলেন সেই জাতিও হক। সুতরাং সত্যের স্বাভাবিক ফল হবে শান্তি, এজন্য ইসলাম অর্থই শান্তি। কিন্তু আজকে যে ইসলাম আমরা দেখছি তা আমাদের শান্তি দিতে পারছে না কেন? কারণ ইসলামের নামে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী মানুষের ঈমানকে ভুল পথে প্রবাহিত করে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার করছে, কেউ অপরাজনীতি করছে, কেউ জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছে।
আল্লাহ ও তাঁর রসুলের সেই প্রকৃত ইসলাম সকল জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে নিয়ে একটি শান্তিপূর্ন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রতিটি মানুষ নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে চলাফেরা ও জীবনযাপন করতে পারত। কারো বিশ্বাসের উপর কোনো জবরদসিত্ম ছিল না। মানুুষের জীবন-সম্পদ ও সম্মানের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর আজ জঙ্গিবাদীরা সাধারণ মানুষের মধ্যে নৃশংস উপায়ে মানুষ হত্যা করে ত্রাসের সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। আল্লাহ রসুলের ইসলাম ঐক্যহীন বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, শত্রুকে ভাই বানিয়েছিল আর আজকে ইসলামের নামে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে ঐক্যহীন করা হচ্ছে, ভাইকে শত্রু বানানো হচ্ছে, এক মুসলিম জাতিকে হাজারো মাজহাব ফেরকায় ভাগ করা হচ্ছে। আল্লাহ রসুলের ইসলাম স্বার্থপর আত্মকেন্দ্রিক মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে উৎসর্গিকৃত প্রাণ মানুষে পরিণত করেছিল, সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ও সোচ্চার মানুষ তৈরি করেছিল। আর এদের ইসলাম সমাজের অন্যায় অশান্তি থেকে মুখ ফিরিয়ে স্বার্থপরের মতো ব্যক্তিগত জীবন ও আমল নিয়ে ব্যস্ত থাকার শিক্ষা দিচ্ছে।
সকাল ১১টায় হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী র্যালি দুর্গাহাটার গুরুত্ব সড়ক প্রদক্ষণ করে। এতে হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় আমীর মসীহ উর রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় আমীর জোবায়ের আহম্মেদ নুহু, রাজশাহী জেলা আমীর রায়হানুল ইসলাম, বগুড়া সদর আমীর খাজা আহমেদ রতন, মোজাহেদ তোতা শেখ, ডাঃ শরিফুল আলম টিপু, আব্দুল জোব্বার শেখ, সাজেদুর রহমান সাজু, মোতালেব হোসেন, খান জাহান আলী, বিপস্নব ইসলাম প্রমুখ। পৃথক র্যালিতে দুর্গাহাটা ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ শতশত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।