‘বাংলাদেশ নিজেদের রক্ষায় বিশ্বের জন্য অপেক্ষা করবে না’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ নিজেদের রক্ষায় বিশ্বের জন্য অপেক্ষা করবে না। বরং সীমিত সম্পদ ও প্রযুক্তি নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা টিকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) দেখতে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আমরা প্যারিসে আসন্ন জলবায়ু চুক্তি এবং এই চুক্তি বাস্তবায়ন দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।

তবে বাংলাদেশ নিজেদের রক্ষায় বিশ্বের অপেক্ষায় বসে থাকবে না। আমরা আমাদের সীমিত সম্পদ ও প্রযুক্তি নিয়েই ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী হাফিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক নিবন্ধে একথা বলেন। হাফিংটন পোস্ট হচ্ছে, একটি উদারপন্থী আমেরিকান অন লাইন নিউজ সংযোগকারী এবং ব্লগ সাইট। ২০০৫ সালের ১০ মে হাফিংটন পোস্টের যাত্রা শুরু হয়। ২০১২ সালের জুলাই মাসে এটি ড্রাগ রিপোর্ট হিসেবে নিউজ এগ্রিগ্যাটর হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৫টি সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক সাইটের মধ্যে এটি স্থান ছিল এক নম্বরে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিবন্ধে বলেন, বিশ্ব আমার দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা গ্রহণ করবে। এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে আমরা হুমকির মুখে আছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনবসতি ১ হাজার ২শ’ ১৮ জন। যদিও আমরা মিলোনিয়াম লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে সফল হয়েছি। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, সামুদ্রিক জলোচ্ছাস এবং অতিবর্ষণে কৃষি উৎপাদন, শিল্প উন্নয়ন ও সামাজিক অবকাঠামোর ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এতে লাখ লাখ উদ্ভাস্তুর সৃষ্টি হচ্ছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অবদান অবহেলিত। এ সকল কারণে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। এতে সমুদ্র সীমায় জলসীমা বেড়ে যেয়ে দেশের এক পঞ্চমাংশ তলিয়ে যাবে। প্রায় তিন কোটি লোক গৃহহারা হয়ে যাবে। বিপুলসংখ্যক লোক নগরীতে আশ্রয় নেবে। এতে নগর জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়বে। খাদ্য, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও মৌলিক অবকাঠামো সংকট দেখা দেবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এ জন্য আমরা ২০১১ সালে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশের উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ, বন্য ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণের জন্য সংবিধান সংশোধন করেছি। দেশের বনভূমি সংরক্ষণের জন্য ২০০৯ সালের পর থেকে কমপক্ষে আটটি নতুন আইন প্রণয়ন অথবা সংশোধন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী নিবন্ধে বলেন, দেশে মোট বনভূমির পরিমাণ ২০১৪.১৫ সালে ১৭.০৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০০৫-০৬ সালে এর পরিমাণ ছিল ৭ থেকে ৮ শতাংশ। সরকারের বনায়ন কর্মসূচিতে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে বনায়ন বেড়েছে। নগর ও পল্লী অঞ্চলের প্রতিটি খালি জায়গায় গাছ লাগানো হয়েছে। বর্তমানে প্রতিবছরে ১২০ মিলয়নের বেশি গাছের চারা বিতরণ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে বাংলাদেশ ছিল প্রথম উন্নয়নশীল দেশ। তিনি বলেন, ২০০৯-২০১০ সাল থেকে ২০১৪-২০১৫ সাল পর্যন্ত সরকার আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে ৩৩.৩০ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সকল কর্মকান্ডের লক্ষ্য হচ্ছে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করা।

Comments (0)
Add Comment