এদিকে এই আয়োজনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাসহ নিজস্ব উদ্যোগে তিন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে মন্ডপে বসানো হয়েছে ৪৫টি সিসি ক্যামেরা। বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লিটন শিকদারের বাড়িতে এবার সর্ববৃহৎ পূজামন্ডপ তৈরি করা হয়েছে। এই মন্ডপে ৬০১টি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। আর প্রতিমাগুলোর সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রামায়ণ ও মহাভারতের বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী ও দেব-দেবীর প্রতিরূপ, রয়েছে আলোকসজ্জা। আয়োজকরা বলছেন, শুধু বাগেরহাটই নয়, প্রতিমার সংখ্যা ও আড়ম্বতার দিক থেকে এ বছর এটাই বিশ্বের সব থেকে বড় দুর্গাপূজার মন্ডপ।
এই পুজামন্ডপের নেতৃবৃন্দ আশা করছেন, তাদের মন্ডপে ভক্ত দর্শনার্থীদের ভিড় থাকবে নজরকাড়া। জেলার বিভিন্ন স্থান, অন্য জেলা এমনকি পশ্চিম বাংলা থেকেও আসবে দর্শনার্থী ও পূজারীরা। এমনকি বিশিষ্ট গুণীজন, অভিনেতা, অভিনেত্রী, শিক্ষাবিদদেরও আসার কথা রয়েছে। শনিবার দুপুরে আসছেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। এবার বাগেরহাটের সিকদার বাড়ি সর্ববৃহত্তম পূজামন্ডপের সব থেকে বড় আকর্ষণ কৈলাশ পর্বতের কাহিনীর কিছু বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে পুকুরের মধ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সাবেক স্নাতকোত্তর দিব্যতনু দাসের নেতৃত্বে ১০ জন শিল্পী পুকুরের মাঝে ৪০ ফুট উঁচু টাওয়ারে কৈলাশ পর্বতের অংশবিশেষ স্থাপন করেছেন। যেখানে সবার উপরে রয়েছে মহাদেবের প্রতিমা। এরপর রাম, লক্ষ্মণ, সীতা ও হনুমান। মহাদেব ও রামের হাত আর্শীবাদ করা অবস্থায় রয়েছে। যা দেখে মুগ্ধ হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও দর্শনার্থীরা।
শিকদারবাড়ি দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দুলাল শিকদার বলেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুরু থেকেই এলাকার মানুষের উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়ে আসছি। তাদের পরামর্শ ও উপদেশ আমার অনেক কাজে লাগছে। ২০১০ সালে ৩০১টি প্রতিমা নিয়ে এই মন্দিরে দুর্গাপূজা শুরু হয়। গত বছর ছিল ৪৫১টি প্রতিমা। এ বছর আমরা ৬০১টি প্রতিমা নিয়ে উপমহাদেশের সব থেকে বড় দুর্গাপূজা আয়োজন করেছি। এখানে এলে দর্শনার্থীদের মন ভরে যাবে। আয়োজকদের অন্যতম ব্যবসায়ী লিটন সিকদার বলেন, কয়েক বছর ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও দর্শনার্থীদের মন জয় করতে প্রতিমার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। গত বছর ৪৫১ টি প্রতিমা নিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করা হয়। সে সময়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবার ৬০১টি প্রতিমা নিয়ে এত বড় আয়োজন। আমার জানা মতে, এটি প্রতিমার সংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর সব থেকে বড় পূজামন্ডপ। তিনি আরও বলেন, দর্শনার্থী ও ধর্মালম্বীরা নির্বিঘ্নে দুর্গোৎসব উপভোগ করতে পারে সেজন্য সিসি ক্যামেরাসহ ৩০০ নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত থাকবে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস জানান, জেলার ৯টি উপজেলায় এ বছর মোট ৬০৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুর্গাপূজায় সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এছাড়া শিকদার বাড়ির বড় মন্ডপে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমিত রায় বলেন, বাগেরহাটে জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে।