বাঘায় জমে উঠেছে আমের বাজার; রাতভর চলছে বেচাকেনা

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, রাজশাহী:
রাজশাহী বাঘায় জমে উঠেছে ফলের রাজা আমের বাজার। আমের কাজে ব্যস্ত মজুর ও ব্যাপারী। ভোররাত থেকে আরম্ভ করে রাত ১১টা পর্যন্ত চলছে আম বেচাকেনা। এবার আমের দাম বেশি হলেও কমতি নেই বেচাকেনার। উপজেলা সদরে অবস্থিত বাসটার্মিনাল এলাকায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার আম বেচাকেনা হচ্ছে। এ ছাড়াও মনিগ্রাম, আড়ানী পৌর এলাকা ও বাউশা বাজারে বসেছে পৃথকভাবে তিনটি আমের বাজার। এ বাজারগুলোতেও প্রতিদিন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা আম ক্রয়-বিক্রয় করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজশাহীর কয়েকটি থানার মধ্যে আম প্রধান উপজেলা হিসেবে বাঘার পরিচিতি ব্যাপক। প্রতি বছরই আমের এই মৌসুমে এখানে বেশ কয়েকটি আমের বাজার গড়ে উঠে। এখানে বড় বড় ব্যবসায়ীরা চুক্তি মূল্যে বাগান কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে আম চালান করলেও বসে থাকে না দরিদ্র ব্যবসায়ীরাও। তারা আম ফেরি করে গ্রামে গ্রামে ক্রয় করেন। এরপর স্বল্প পরিসরে সেগুলো নিকটতম বাজারে বিক্রি করেন। বাউশা ইউপি এলাকার ব্যবসায়ী বাবু জানান, বর্তমানে আমের বাজারও ভালো। এ কারণে তাদের লাভও ভালো হচ্ছে।
বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম এলাকার বিশিষ্ট আম ব্যবসায়ী মো. জিন্নাত আলী জানান, উপজেলা সদর বাঘা, আড়ানী ও মনিগ্রাম বাজারে প্রতিদিন ধুমে চলছে আম বেচাকেনা। এসব বাজারের আমের আড়ৎ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শতশত পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাধ্যমে হাত বদল হচ্ছে বিভিন্ন জাতের আম। যা ট্রাকে করে চালান দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতিদিন ভোর হতে না হতেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আম বাগান থেকে-মিনি ট্রাক, সিএনজি, নসিমন, করিমন ও রিকশা-ভ্যান বোঝাই করে উপজেলার সদরে অবস্থিত বাস টার্মিনাল বাজার এবং আড়ানী ও মনিগ্রাম বাজারে আম আসছে। এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরোদমে সেগুলো কেনাবেচা চলছে। উপজেলার আলাইপুর গ্রামের বাগান মালিক নজরুল মণ্ডল জানান, ক্রয়কৃত বাগানসহ প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে। তাতে এ বছর আমের উৎপাদন ভালো না হলেও গত বছরের তুলনায় এবার বেশি দামে আম বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে লোকসানের অংক অনেকটাই পুষিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাঘার আমের আলাদা খ্যাতি রয়েছে। এ কারণে এখানকার আম অন্যান্য জায়গার আমের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার মনিগ্রাম হাজিপাড়া এলাকার আম ব্যবসায়ী মো. দুলাল হোসেন মোল্লা জানান, বর্তমানে এই বাজারে খিরশাপাত, গোপাল ভোগ ও ল্যাংড়া আম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অপর দিকে তোতাপরি, আম্রপলী, রানী পছন্দ, সেনরি ও লকনাসহ অন্যান্য গুটি জাতীয় আম ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে কেনাবেচা হচ্ছে। তিনি বলেন, এখান থেকে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল আম মোকামের উদ্দেশে প্রতিদিন ভোর ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কমপক্ষে ২০০টি ট্রাক যাতায়াত করছে। এ ছাড়াও আভ্যন্তরীণ রোড-বগুড়া, নাটোর, রংপুর, কুষ্টিয়া ও রাজশাহীর উদ্দেশে একাধিক বাসেও এসব আম যাচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment