কুষ্টিয়ার পৌর এলাকার জুগিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার বালু ঘাট দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে দিনভর গুলি বিনিময় ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় এবং প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ধাওয়া করতে দেখা গেছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে জুগিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানান, পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মহিদুল ইসলাম জুগিয়া বালু ঘাটের ইজারা নেন। গড়াই নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত এই ঘাটের বালু টেন্ডারের মাধ্যমে ‘ডেকে’ নেন মহিদুল ইসলামসহ অন্যরা।
৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা দেশ ফেলে পালানোর পর বিএনপির একটি পক্ষ বালু ঘাটের দখল নিতে তৎপর হয়। এর ফলে বারখাদা ও জুগিয়া এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুটি পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ে। মহিদুল ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমঝোতা হয়, যার ভিত্তিতে মহিদুল ৪০ ভাগ এবং বিএনপির নেতারা ৬০ ভাগ অর্থ পাবেন।
এদিকে, ভাগ-বাটোয়ারায় অংশ না নেওয়ায় বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের অনুসারী শাহজাহান আলী সাজুর অনুগত কর্মীরা বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। মঙ্গলবার সকালে উত্তেজনা শুরু হলে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন এবং বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও তার অনুগতরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
বালু ঘাটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মহিদুল, তার ভাই এবং বিএনপির একটি পক্ষ আজ অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেন। এ সময় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায় ইশতিয়াককে, যা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এলাকাবাসী আশরাফুল ইসলাম জানান, বালু তোলার কারণে এলাকাবাসীর জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি আমিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা বিএনপির পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, গত দু’দিন ধরে উত্তেজনা চলছে এবং অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।