সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ু দূষণের ফলে হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি দিনকে দিন আরো ব্যাপকহারে বাড়ছে। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুমণ্ডলে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি যদি অণু পরিমাণেও বাড়ে তাতেও হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায় ব্যাপক হারে।
উদাহরণত, বায়ু মণ্ডলের প্রতি কিউবিক মিটার বাতাসে যদি নূন্যতম ১০ মাইক্রোগ্রাম ক্ষতিকর রাসায়নিকও বৃদ্ধি পায় তার ফলে হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকিও বেড়ে যায় ১০ শতাংশ।
গবেষক দলের প্রধান নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাঙ্গন মেডিকেল সেন্টারের অধ্যাপক জর্জ থার্স্টন বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় অধুমপায়ীদের মাঝে হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মৃত্যুর পেছনে বায়ুদূষণের ভূমিকা পরখ করে দেখা হয়।’
এতে দেখা গেছে, বায়ু দূষণের ফলে অধুমপায়ীদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে গেছে ২৭ শতাংশ।
থার্স্টন বলেন, ‘বাতাসে থাকা অতিক্ষুদ্র বিষাক্ত উপাদানগুলো খুব সহজেই দেহের প্রতিরক্ষা দেয়ালের ফাঁকফোকর গলে ফুসফুস ও রক্তের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। যার পরিণতিতে মারাত্মক হৃদরোগ ও ফুসফুসের রোগ সৃষ্টি হতে পারে।’
মানবদেহ বাতাসে থাকা বড় আকারের দূষণ উপাদানগুলো (মাটি ও বালুকনা) ছেকে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় অথবা কফ আকারে বের করে দেয়। কিন্তু অণু আকৃতির বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদানগুলো সহজেই দেহে প্রবেশ করে।
এসব উপাদান মূলত ক্ষতিকর রাসায়নিক- আর্সেনিক, সেলেনিউম, ও পারদ অথবা গ্যাসীয় দূষণ উপাদান- সালফার, নাইট্রোজেন অক্সাইডস প্রভৃতি থেকে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (এনআইএইচ) এবং অ্যামেরিকান এসোসিয়েশন অব রিটায়ার্ড পারসনস (এএআরপি) পরিচালিত স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ জরিপসমূহের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে এই গবেষণাটি করা হয়।
এনআইএইচ-এএআরপি পরিচালিত ওই গবেষণায় ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, লুইজিয়ানা, নিউজার্সি, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া এবং আটলান্টা ও ডেট্রয়েটের ৫ লাখ ৬৬ হাজারা নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করেছিল। ২০০০ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ওই জরিপগুলো চালানো হয়।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার এয়ার কোয়ালিটি সিস্টেম এবং অন্যান্য ডাটাবেজের তথ্য-উপাত্তও এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর