তিনি বলেন, মানুষ আল্লাহর অন্য সকল সৃষ্টির মতো নয়। আল্লাহ মানুষের মধ্যে চিন্তাশক্তি দান করেছেন। কাজেই সকল বিষয় নিয়ে মানুষকে ভাবতে হবে, চিন্তা করতে হবে। গত কয়েক দশকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের বহু দেশ। এর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে একের পর এক মুসলিম দেশগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের মুসলমানদের অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছি। বিগত বছরগুলোতে সন্ত্রাসবাদের কালো থাবা পরেছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতেও। তাই এখন আমাদেরকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে, এর থেকে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। তারা ধর্মবিশ্বাসী সাধারণ মানুষের ঈমানকে ভুল খাতে প্রবাহিত করে দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিস্তার করতে সচেষ্ট। কিন্তু আমরা আমাদের প্রিয় এই দেশকে ইরাক-সিরিয়া-আফগানিস্তানের মতো করুণ পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারি না। কিন্তু এই পরিণতি এড়াতে হলে আমাদেরকে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। মাঠে-ময়দানে দেশের সকল মানুষকে একটি সঠিক আদর্শের দ্বারা উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এই সঠিক আদর্শটি হেযবুত তওহীদের কাছে আছে।
তিনি আরো বলেন, এই ভয়ঙ্কর সংকট থেকে আমাদেরকে রক্ষা করতে পারেন একমাত্র আল্লাহ। এই সংকটে পড়ে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়া ইত্যাদি দেশগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন যদি আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকেও এই সংকট থেকে বাঁচাতে হয় তবে একমাত্র উপায় হচ্ছে মো’মেন হওয়া। কারণ মো’মেনের সাথে আল্লাহর ওয়াদা, তিনি মো’মেনদের রক্ষা করবেন, তিনি মো’মেনদের অভিভাবক। আর এই মো’মেন হতে হলে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যায় যেই করুক তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ইসলামের নামে আমাদের সমাজে বহু অনৈসলামিক কার্যক্রম চলছে। এগুলো আল্লাহ রসুলের দেখানো পথের সম্পূূর্ণ বিপরীত। তিনি প্রকৃত ইসলাম ও বিকৃত ইসলামের রূপ তুলে ধরে বলেন, প্রকৃত ইসলাম মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, শত্রƒকে ভাই বানিয়েছিল, আরবের অবজ্ঞাত, উপেক্ষিত, অশিক্ষিত একটা জাতিকে শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত করে শিক্ষকের জাতিতে পরিণত করেছিল। আর বর্তমানের বিকৃত ইসলাম মানুষের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে, এক জাতিকে হাজার হাজার ফেরকা, মাজহাব, দল-উপদলে ভাগ করে পরস্পর শত্রƒতে পরিণত করে।
তিনি বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতি ও মুসলিম জাতির করুণ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে বলেন, জঙ্গিবাদের উৎপত্তি কীভাবে হলো? কীভাবে বিশ্ব পরাশক্তিগুলো মুসলমানদের ঈমানকে কিছু ভাড়াটে আলেমদের মাধ্যমে হাইজ্যাক করে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করল? এসব প্রশ্নের উত্তর আমাদেরকে জানতে হবে। তিনি হেযবুত তওহীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, মানবজাতির মধ্য থেকে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, অনৈক্য, ভেদাভেদ দূর করে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য রসুলাল্লাহ (সা.) এর প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা তুলে ধরে মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। এটা করার জন্য হেযবুত তওহীদের সদস্যরা তাদের জীবন ও সম্পদ মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করে যাচ্ছেন। এই কাজের পুরস্কার তারা মহান আল্লাহর নিকট আশা করেন, তারা এর বিনিময়ে পার্থিব কোনো স্বার্থ আশা করেন না। তাদের কোরবানীর বিনিময়েই হেযবুত তওহীদ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে। কাজেই হেযবুত তওহীদের কোনো আর্থিক ও রাজনীতিক স্বার্থ নেই।
হেযবুত তওহীদের কুমিল্লা জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মিসভায় সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম উখবাহ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন হেযবুত তওহীদের কুমিল্লা জেলা সভাপতি মিজানুর রহমান সরকার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন, হেযবুত তওহীদের নোয়াখালী জেলা সভাপতি গোলাম কবির, লক্ষীপুর জেলা সভাপতি জিল্লুর রহমান মানিক, চাঁদপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি ইয়াসমিন আক্তার ইলা, ফেণী জেলা সহ-সভাপতি ইলিয়াস আহমেদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমাগম ঘটে। সভায় উপস্থিত জনতা হেযবুত তওহীদের মাননীয় এমামের বক্তব্যের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে বহু মানুষ হেযবুত তওহীদের এমামের সাথে করমর্দন করেন। এ সময় অনেককেই আবেগাপ্লুত হয়ে হেযবুত তওহীদের এমামের সাথে তাদের অনুভুতি প্রকাশ করতে দেখা যায়। সত্যের সন্ধান লাভে তাদের চোখে-মুখে এ সময় ফুটে ওঠে প্রশান্তির আভা।