ঘটে যাওয়া এ অগ্নিকাণ্ডের তদন্তের জন্য নৌ ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব সাফায়েত হোসেনকে প্রধান করে ৪ সদস্যর একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ল্যান্ড পোর্টের সচিব হাবিবুর রহমান, ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি ডাইরেক্টর পরিমল কুন্ডু ও যশোর জেলা প্রশাসকের দপ্তরের একজন প্রতিনিধি।
রবিবার বিকাল থেকেই তদন্ত টিম কাজ করে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা তাদের পুড়ে যাওয়া মালামাল শনাক্ত করছে। বন্দর থেকে পোড়া মালামাল অন্যত্র সরানোর কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে বন্দরের ২৩ নং শেডে থেকে থেকে আগুন জ্বলছে এখনো। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখনো কাজ করছে।
এ পর্যন্ত প্রাথমিক ভাবে ১১৫টি পণ্য চালানের হিসাব পেয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে কতটি পণ্য চালানের মালামাল ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তদন্ত টিম। তবে পুড়ে যাওয়া মালের মালিক ও ব্যবসায়ীরা হতাশায় ভুগছেন।
তারা বলছেন তাদের খেসারতের কথা। রবিবার বন্দরে পরিদর্শনে আসা নৌ ও পরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খান ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে জানান, পুড়ে যাওয়া মালামালের ক্ষতি পূরণ দিবেন ইন্সুরেন্স কর্তৃপক্ষ। এরূপ বক্তব্যে ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা মালামাল রেখেছি বন্দর ওয়্যার হাউজে। পোর্ট চার্জ দেই বন্দর কর্তৃপক্ষকে। মালামাল খালাস না নেয়া পর্যন্ত মালের দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষের। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে পুড়ে যাওয়া মালামালের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করছি এখন আমাদের যে ক্ষতি হলো তার দায়ভার কে নিবে?
ব্যবসায়ীরা জানান, এ শেডে প্রায় ১০০ কোটি টাকার অধিক মালামাল ছিল। আমদানীকারক হাদিউজ্জামান জানান, তার ৩টি পণ্য চালানের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ব্যাংকের লোনের টাকায় আমদানি করা এ সব মালামাল নষ্ট হওয়ায় তিনি এখন কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না।
ব্যবসায়ী মিয়াদ আলী জানান, তার আমদানিকারক গোদরেজ কোম্পানির ৪৬টি পণ্য চালানের ৩ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে অনুরূপভাবে পুড়ে গেছে এনার্জি প্যাকের ১১টি পণ্য চালানের ২৭ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানালেন ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান।
বেনাপোল সি এন্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বন্দরের ২৩ নং শেডে কর্মরত ট্রাফিক পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এবং পোর্টের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে পুড়ে যাওয়া শেডের ১১৫টি পণ্য চালানের কাগজপত্র পেয়েছি এবং বাকী কাগজ পত্র কাস্টম থেকে সংগ্রহ করার পর এ শেডে কতটি পণ্য চালান ছিল তা জানা যাবে। পণ্য চালানের সঠিকতা পেলে মোট ক্ষতি ও টাকার অংকও পাওয়া যাবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা কিভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন তা নির্ভর করছে তদন্ত টিমের প্রতিবেদনের ওপর।