বেরোবির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি

তপন কুমার রায়,বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার দিকে প্রগতিশীল ছাত্রজোট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে এই স্মারকলিপি প্রদান করে। উপাচার্যের অনুপস্থিতির কারণে জোট নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের একান্ত সচিবের মাধ্যামে এই স্মারকলিপি পেশ করে।

স্মারকলিপিতে জানানো হয় যে,দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গত ৫ ও ৬ মে অনুষ্ঠিত হয়। উচ্চ শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন্ প্রান্ত থেকে প্রায় লাখ খানেক শিক্ষার্থী ভর্তি ফরম উত্তোলন করেছিলো। শিক্ষার্থীদের দৃঢ় প্রত্যাশা ছিলো যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই ভর্তির সুযোগ তৈরী হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের সে আশা পূরণ হয়নি। এক কুচক্রী মহল নিজেদের স্বার্থে পুরো ভর্তি প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং ভর্তি পরীক্ষার স্বচ্ছতাকে নষ্ট করেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ভর্তিপরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে  অনৈতিক ও বেআইনি ঘটনা এবং জালিয়াতির বিষয়ে জানানো হয়-

১। ওএমআর শিট ছাড়াই এ  ইউনিটের ১১৬০২৪, ১১৩৭৬৭ ও ১১৫৯৫০ (মেধাক্রম যথাক্রমে ২৪, ৩০, ৫৩) রোল নম্বরের রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়েছে।

২। এ ইউনিটের ১৮ টি ওএমআর শিট ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক (এ ইউনিট) একক সিদ্ধান্তে বাসায় নিয়ে যায়।

৩। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও এ ইউনিটের মেধা তালিকায় মো. মোস্তাফিজুর রহমান ১৬১ তম স্থান (রোল নম্বর- ১৪৬০২০) অধিকার করে।

৪। গণিত বিভাগের প্রভাষক ইসমাইল হোসেন ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। নিজ ছোট বোন পরীক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও ভর্তি পরীক্ষার কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের ছোট বোন মোছা. ইহতিসামুন নিশা ( ডি ইউনিট, রোল-৪১২১২৭) দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে।

৫। অবৈধ পন্থায় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও ভাইভা পরীক্ষায় ধরা পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা (সেকশন অফিসার গ্রেড-২) ও সরকার দলীয় পরিচয়দানকারী এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিজেদের রক্ষার জন্য অপরাধী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
৬। ভর্তিচ্ছু বিজ্ঞান বিভাগের কিছু পরীক্ষার্থী অবৈধভাবে ই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যাদের মেধাক্রম ৪, ৭৩, ৮৮।

এছাড়াও অভিযোগসমূহ আমলে নিয়ে একটি স্বচ্ছ-কার্যকর তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে, তদন্তে প্রমাণিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ফলাফল স্থগিত রাখতে হবে বলে স্মারকলিপিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবী তুলে ধরা হয়েছে।

অন্যথায় প্রগতিশীল ছাত্রজোট সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে নেতারা জানান।

Comments (0)
Add Comment