অনলাইন ডেস্ক: গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার টার্গেট ছিল না পুলিশের গুলিতে নিহত নব্যধারার জেএমবির শীর্ষনেতা তামিম চৌধুরীর। তার ছকে ছিল গুলশানের অন্য বেশ কয়েকটি স্থাপনা। কিন্তু গুলশান হামলার অপারেশন কমান্ডার নুরুল ইসলাম মারজান এ টার্গেট পয়েন্ট নির্ধারণ করে। এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পর তামিম চৌধুরী হলি আর্টিজানে হামলার অনুমোদন করে। তার ৭-৮টি টার্গেট পয়েন্টের মধ্যে পাঁচতারকা হোটেলও ছিল। কিন্তু তাকে মারজান বোঝাতে সক্ষম হয় হলি আর্টিজানে আক্রমণ করলে একসঙ্গে অধিক সংখ্যক বিদেশি নাগরিক পাওয়া যাবে। তা ছাড়া পাঁচতারকা হোটেলে আক্রমণ নিজেদের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে অন্যসব টার্গেট পয়েন্ট থেকে নব্যধারার জেএমবির নীতিনির্ধারকরা তখন ফিরে আসে বলে গুলশান হামলা মামলা তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
তদন্তকারী সূত্রগুলো জানায়, হলি আর্টিজানে আক্রমণ চালাতে নুরুল ইসলাম মারজান কয়েক দফা হলি আর্টিজান যায়। কীভাবে জঙ্গিরা ঢুকবে, আক্রমণ করবে, বেরিয়ে আসবে এর অপারেশন পরিকল্পনা মারজান এক হাতে তৈরি করে। পরে তামিম চৌধুরী তার পরিকল্পনার সঙ্গে একমত হয়।
তামিম চৌধুরী গত শনিবার নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার জঙ্গি আস্তানায় পুুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আর নুরুল ইসলাম মারজানকে ধরতে এখনো পুলিশের অভিযান চলছে। তাকে ধরতে পারলে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করছেন।
সূত্র জানায়, নব্যধারার জেএমবির সদস্যরা একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে হামলারও পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন গত বছর নিহত হওয়ায় তা ভেস্তে যায়। গুলশান হামলার পর পরই ঢাকার পুলিশ কমিশনার বেসরকারি সব টেলিভিশন চ্যানেলে ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে নিরাপত্তা জোরদার করেন। তিনিও কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল পরিদর্শন করে নিরাপত্তার বিষয়ে আরও উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করেন।
এদিকে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, গত ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের গুলিতে ৯ জঙ্গি এবং ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে তামিম চৌধুরীসহ ৩ জঙ্গি নিহত হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েক জঙ্গি ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে র্যাব-পুলিশের হাতে। জঙ্গিবাদে অর্থায়ন ও অস্ত্র-বিস্ফোরকের চালান জঙ্গিদের হাতে পৌঁছানোর বেশকিছু রুট বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে রাজধানীতে নিরাপত্তা ঝুঁকির মাত্রা অনেক কমে গেছে বলে মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। বেড়েছে দৃশ্যমান নিরাপত্তাও।