ব্যাংক সেক্টরে নানা অনিয়ম, কঠোর অবস্থানে গভর্নর

স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে চলছে নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া নির্দেশনা ও বিধানও সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকরা দেশের ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শনে গিয়ে এসব অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার চিত্র দেখতে পেয়েছেন। সম্প্রতি পরির্দশকদের সঙ্গে ড. আতিউর রহমানের বৈঠকে এসব অনিয়মের চিত্র উঠে আসে। আর এসব নিয়ে নিজের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন গভর্নর। বৈঠকে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক ড. মাহফুজুর রহমান, সহকারী পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপকরা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে পরিদর্শকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উঠে আসা ব্যাংকের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরির্দশকরা এসময় রাষ্ট্রায়ত্ব ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর বহু অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা গভর্নরকে অবহিত করেন। পরিদর্শকরা রাজধানী ঢাকার বাইরের ব্যাংকগুলো পরিদর্শনে গিয়ে যেসব বিষয় যথাযথভাবে পালন করা হয় না সেগুলো উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছে টাকা ও মূল্যবান কাগজপত্র রাখার ভল্ট যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা, গ্রাহক সেবা প্রদানে অভিজ্ঞ কর্মকর্তার চরম অভাব। অর্থঋণ আদালতের মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বহু দিনের খেলাপী ঋণ আদায় হচ্ছে না, ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের নামে অনৈতিকভাবে বিভিন্ন জনকে ঋণ প্রদান করা, ইসলামী ব্যাংকগুলোর শরীয়াহ মোতাবেক সকল কার্যক্রম পরিচালনায় অনীহা প্রকাশ উল্লেখযোগ্য। একইভাবে রাজধানীর ব্যাংকগুলো গ্রাহককে প্রাপ্যতার অনেক বেশি ঋণ দেওয়া, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ভবন ভাড়া নিয়ে ব্যাংকের শাখা খোলা, ব্যাংকের সাজসজ্জার নামে নির্ধারিত অংকের বেশি অর্থ ব্যয় করা, বোর্ড মিটিংয়ের নামে অর্থের অপচয় করার কথাও উল্লেখ করা হয়। গভর্নর বৈঠকে উপস্থিত পরিদর্শকদের কাছে এসব বিষয় জানতে চান। এ সময় মহাব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তাফা গর্ভনরের কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। তার কাজের মান সন্তোষজনক না হওয়ায় পরিদর্শন বিভাগ থেকে তাৎক্ষণিক বদলির নির্দেশ দেন। এ সময় প্রত্যেক পরিদর্শকের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ব্যাংক পরিদর্শনের সময় অনিয়ম, দুর্নীতি ধরা ও গভর্নরকে অবহিত করার ক্ষেত্রে কোন রকম দেরি না করার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এএফএম আসাদুজ্জামান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গভর্নর ব্যাংক পরিদর্শনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে পরির্দশকদের নির্দেশ দিয়েছেন। নতুন পণ্য সম্পর্কে গ্রাহককে বোঝাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরামর্শ প্রদান ও পরিদর্শনের সময় সকল প্রকার ভয়ভীতির উর্ধ্বে থেকে কাজ করতে বলেছেন। এসময় গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তঃবিভাগ সমন্বয় করে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।

Comments (0)
Add Comment