স্পোর্টস ডেস্ক:
২০০২ বিশ্বকাপ জেতার পর টানা চার বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে ব্রাজিল থামে ইউরোপের চার দলের বিপক্ষে হেরে। নেইমারের রেকর্ড ছোঁয়া গোলে মনে হচ্ছিল কেটে যাচ্ছে সেই গেরো। কিন্তু লক্ষ্যে রাখা একমাত্র শটেই গোল করে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া। শেষ পর্যন্ত পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো গেল সেমি-ফাইনালে।
আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে শুক্রবার কোয়ার্টার-ফাইনালের নির্ধারিত সময়ে ছিল গোলশূন্য সমতা। ১০৬তম মিনিটে ব্রাজিলকে এগিয়ে নেন নেইমার। ব্রুনো পেতকোভিচের গোলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ টাইব্রেকারে নেয় ক্রোয়েশিয়া। সেখানে ৪-২ গোলে জায়গা করে নেয় শেষ চারে।
বল দখলে দুই দল ছিল সমানে-সমান। তবে আক্রমণ ও গোলের সুযোগ তৈরি করায় অনেক এগিয়ে ব্রাজিল। তাদের ১৫ শটের আটটি ছিল লক্ষ্যে, যদিও এর কোনোটিই খুব বেশি ভাবাতে পারেনি ক্রোয়াট গোলরক্ষককে। বেশিরভাগ শটই ছিল অনেকটা তার বরবার। ক্রোয়েশিয়ার ছয় শটের কোনোটিই ছিল না লক্ষ্যে।
কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া ব্রাজিলের বিপক্ষে একটু সাবধান থাকবে ক্রোয়েশিয়া। রক্ষণে একটু বেশি মনোযোগ দেবেন লুকা মদ্রিচরা। সেটি হয়নি, জবাব দেয় আক্রমণাত্মক ফুটবলেই।
পঞ্চম মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নেয় ব্রাজিল। ভিনিসিউস জুনিয়রের শট সহজেই ঠেকান ক্রোয়াট গোলরক্ষক দমিনিক লিভাকভিচ।
আট মিনিট পর নিজেদের প্রথম ভালো সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। বল পায়ে নিজেদের অর্ধ থেকে প্রায় ডি-বক্স পর্যন্ত চলে যান ইয়োসিপ ইউরানোভিচ। তার বল পেয়ে ক্রস করেন মারিও পাসালিচ। বক্সে ইউরারোভিচের ডামির পর দারুণ জায়গায় বল পেয়ে যান ইভান পেরিসিচ। কিন্তু এদের মিলিতাওয়ের চাপের মুখে তিনি শট রাখতে পারেননি লক্ষ্যে। বেঁচে যায় ব্রাজিল।
২০তম মিনিটে পেনাল্টি স্পটের কাছে ভিনিসিউসের শট ব্লক করেন বোর্না সোসা। কয়েক সেকেন্ড পর গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নেন নেইমার।
৩০তম মিনিটে পেরিসিচের দূরপাল্লার শট যায় ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে। ৪২তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন নেইমার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে ক্রোয়েশিয়াকে চেপে ধরার চেষ্টা করে ব্রাজিল। ৪৮তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও পায় তারা। তবে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে নেইমারের শট ঠেকান ইয়োস্কো গাভারদিওল।
এই আক্রমণের এক পর্যায়ে ইউরানোভিচের হাতে বল লাগে। সম্ভাব্য পেনাল্টি নিয়ে ভিএআরের সাহায্য নেন রেফারি। তবে সেই হ্যান্ডবল দুর্ঘটনাবশত বলে মেলেনি পেনাল্টি।
৫৫তম মিনিটে আবার সুযোগ পান নেইমার। রিশার্লিসনের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের শট নেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। যতটা জোরে মারতে চেয়েছিলেন, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় ততটা পারেননি। কাছের পোস্টে তৎপর লিভাকভিচ ফেরান সহজেই।
৬৬তম মিনিটে লুকাস পাকেতার অবিশ্বাস্য ব্যর্থতায় ভাঙেনি ‘ডেডলক।’ ডি-বক্সে আলগা পেয়ে যান এই মিডফিল্ডার। সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক, কিন্তু তাকে পার করতে পারেননি পাকেতা। বেঁচে যায় ক্রোয়েশিয়া।
১০ মিনিট পর এগিয়ে গিয়ে নেইমারের শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক। ৮০তম মিনিটে ডি-বক্সে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন পাকেতা।