ভারত-পাক পরমাণু যুদ্ধ হলে ধ্বংস হয়ে যাবে মানবসভ্যতা!

অনলাইন ডেস্ক: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হলে শুধু এই দুই দেশ নয়, ক্ষতি হবে গোটা বিশ্বের। সারা পৃথিবীতেই দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। মৃত্যু হবে অন্তত ২০০ কোটি মানুষের। প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে মানবসভ্যতা। ২০১৩ সালেই এমন আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে এক গবেষণা।
তিন বছর আগের সেই গবেষণামূলক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দুই দেশের মধ্যে যদি সীমিত পর্যায়েও পারমাণবিক অস্ত্রের লড়াই হয় তবে, বিশ্বের আবহাওয়ামণ্ডলের ব্যাপক ক্ষতি ও শস্যক্ষেত্র ধ্বংস হবে। আর তার পরিণামে গোটা পৃথিবীতেই খাদ্যপণ্যের বাজারে অত্যন্ত খারাপ প্রভাব পড়বে।
নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ানস ফর দ্য প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়ার এবং ফিজিশিয়ানস ফর সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি নামে দু’টি সংগঠন এই গবেষণামূলক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে ২০১৩ সালে। তার আগে সংগঠন দু’টি ২০১২ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলেছিল, এই রকম একটি পারমাণবিক যুদ্ধে ১০০ কোটির বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
আর ২০১৩ সালে প্রকাশিত গবেষণার দ্বিতীয় সংস্করণে সংগঠন দু’টি বলে, দুই দেশের সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধে চীনের উপরে কেমন প্রভাব পড়বে সেটা তারা অনেকটাই এড়িয়ে গেছে। বিশ্বের জনবহুলতম দেশ চিন সেই যুদ্ধে মারাত্মক খাদ্য-নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পরমাণু যুদ্ধের ফলে আবহাওয়ামণ্ডলে যে কার্বন অ্যারোসল কণা ছড়াবে, তাতে সুদূর আমেরিকাতেও কমপক্ষে এক দশক সময় ধরে কৃষি উৎপাদন প্রায় ১০ শতাংশ কমে যাবে। এ কণার প্রভাবে চিনে প্রথম চার বছরে গড়ে ২১ শতাংশ ও পরের ছ’বছর আরও ১০ শতাংশ ধান, গমের উৎপাদন কমে যাবে।
১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান দুই পৃথক রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত তিনবার দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরমাণু অস্ত্রের মালিক দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গবেষণাটি করা হয় বলে জানানো হয়।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা মার্কিন পরমাণু বোমায় দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এখন পারমাণবিক বোমা আরও শক্তিশালী, আরও ভয়ঙ্কর। সেই প্রেক্ষিতেই ওই গবেষণায় বলা হয়, এখন কোনও পারমাণিবক যুদ্ধ মানেই তা মানবসভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সামিল।

Comments (0)
Add Comment