রেজাউল করিম তুহিন, মধুখালী( ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় উপজেলার জাহাপুর, মেগচামী, আড়পাড়া এবং গাজনা ইউনিয়নের মির্জা কান্দি, শান্তিপুর, বেলেশ্বর এবং নরকোনা গ্রামে উপজেলায় মৌসুমী ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মধু উৎপাদনে লক্ষ্যে ‘মৌ চাষ’ কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে। মৌ বাক্সে বিভিন্ন ফসলের ফুল থেকে মেনিফেরা মৌমাছির মাধ্যমে এ মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে।এর ফলে কৃষক ও মধু চাষী উভয়ই লাভবান হচ্ছে।
মধুখালী উপজেলা কৃষি অফিসার খালেদা পারভীন জানান, এ বছর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর তত্ত্বাবধানে বিশেষ কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলার চারটি ইউনিয়নে বিভিন্ন স্পটে জমিতে মৌমাছির বিচরণে পরাগায়ন এর মাধ্যমে মৌসুমী ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মধু উৎপাদনের লক্ষে ‘মৌ চাষ’ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
মৌ চাষের ফলে কৃষকের জমিতে মৌমাছির বিচরণে ফসলের পরাগায়ন এর ফলে ফসলের ফলন বৃদ্ধি পায়। চলতি রবি-২০১৫-১৬ মৌসুমে উপজেলায় ৯০০ হেক্টর জমিতে সরিষা, ২৫০০ হেক্টর জমিতে পেয়াজ ও পেয়াজ বীজ, ৮৫০ হেক্টর জমিতে রসুন, ৫০২ হেক্টর জমিতে ধনিয়া, ৩৬৫ হেক্টর জমিতে কালজিরার আবাদ করা হয়েছে। তিনি জানান, রবি মৌসুমে ধনিয়া, কালোজিরা, সরিষা ফসলের উৎপাদন খরচ কম। অন্যদিকে এসব ফসলের দাম ও অনেক বেশী হওয়ায় বর্তমানে কৃষক এসব ফসল আবাদে অধিক আগ্রহ প্রকাশ করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর সর্বাত্মক সহযোগীতায় মৌ চাষ সম্প্রসারনের মাধ্যমে আরো উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া মৌ চাষে মধু উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট চাষী আর্থিক ভাবে লাভবান হবে।
সাতক্ষীরা জেলার শ্যাম বাজার থানার মধু চাষী মোশারফ হোসেন জানান, মধুখালী উপজেলার চারটি ইউনিয়নের শান্তিপুর, মির্জা কান্দি, নরকোনা এবং বেলেশ্বর এলাকায় সরিষাফুল, ধূনে, কালোজিরা, পেয়াজ, রশুন, ধনিয়া, খেসারীর আবাদ ভাল হওয়ায় তিনি প্রায় ৯০০টি মৌ বক্সে মেনিফেরা মৌমাছি নিয়ে ৬ মাস পর্যন্ত কয়েকটি জমিতে মধু সংগ্রহ করছেন। ওই সকল ফসলের ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মেনিফেরা মৌমাছি। প্রতিটি বাক্সে প্রায় ৫০ হাজার মৌমাছি থাকে এবং এর থেকে সপ্তাহে ৭৫ মণ মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। তার সাথে ১৪ জন শ্রমিক মধু সংগ্রহের কাজ করছেন। তিনি প্রতি কেজি মধু পাইকারি ২৫০টাকা এবং খুচরা ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেন।