মহাদেবপুরে চলতি মৌসুমে চিনি আতপ ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

ইউসুফ আলী সুমন নওগাঁ: বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁর অন্যতম খাদ্য ভান্ডার মহাদেবপুর উপজেলার সর্বত্র চলতি আমন মৌসুমে চিনি আতপ ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভেজাল মুক্ত সার-কিটনাশকের ব্যবহার,আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবং কৃষি অফিসের ব্যাপক তৎপরতার ফলে চারদিকে শুধু সবুজের সমারোহ। কৃষকরা আগের সব লোকসান কাটিয়ে লাভের আশা করছেন,তাইতো কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। চাষের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুক‚লে রয়েছে। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় পোকার আক্রমণ তেমন নেই । আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রেকর্ড পরিমাণ ধান কৃষকের গোলায় উঠবে বলে আশা করছে কৃষকরা। ধান কাটতে আরো প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে। শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্তসময় কাটাচ্ছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মোট ৯ হাজার ৩’শ হেক্টর জমিতে চিনি আতপ ধান চাষ হয়েছে। উপজেলার সদরের নাটশাল গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন, ‘বীজ তলা থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হবে ৫-৬ হাজার টাকা। এবার আশা করছি ধানের ভাল ফলন পাওয়া যাবে, বিঘা প্রতি প্রায়ায় ১৬ মণ পর্যন্ত। এতে বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি মণ বিক্রি হবে ১ হাজার ৩’শ থেকে ১৪’শ টাকা। হিসাব অনুযায়ী বিঘা প্রতি প্রায় লাভ হবে ১৪ হাজার ৮’শ টাকা। তিনি বলেন, নতুন ধানের গন্ধে ভরে উঠবে মন। ধান বিক্রি করে ছেলে মেয়ের নতুন জামা,জুতা, বই,খাতা, কলমসহ শীতের পিঠা উৎসবে মেতে উঠবে গ্রামের কৃষক। ফারুকের মতো উপজেলার অনেক কৃষক এবার চলতি মৌসুমে লাভের আশা করছেন। মহাদেবপুরে ১৪ টি অটো রাইস মিলে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন আতব চাল উৎপাদন হয়। যা মহাদেবপুরের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, যশোর, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান ছাড়াও বিয়ে-জন্মদিনসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে আপ্যায়নে চিনি আতব চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এর সিংহভাগই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ আমেরিকাতেও রপ্তানি হচ্ছে। এতে কৃষির বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ কে এম মফিদুল ইসলাম বলেন,অন্যান্য বছর বৃষ্টির পানির সঙ্কট থাকলেও চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানির অভাব থেকে কিছুটা মুক্ত ছিল কৃষকরা। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার চিনি আতপ ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভনা রয়েছে। এতে লাভের মুখ দেখবেন কৃষকরা এমনটাই আশা করছেন তিনি।

Comments (0)
Add Comment