লাগাম টানা যাচ্ছে না নাইজেরিয়ার সন্ত্রাসী সংগঠন বোকো হারামের। বরং জঙ্গি গোষ্ঠীটি সাম্প্রতিককালে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি গত ১০ দিনের মধ্যে তাণ্ডব চালিয়ে দেশটির একটি শহরকে মানচিত্র থেকেই ‘হাওয়া’ করে দিয়েছে বোকো হারাম। সম্প্রতি গৃহীত কয়েকটি উপগ্রহ চিত্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমগুলো এ খবর দিচ্ছে। খবরে বলা হচ্ছে, নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাগা ও দোরন বাগায় সম্প্রতি যে হত্যাযজ্ঞ বোকো হারাম চালিয়েছে তাতে নিহতের সংখ্যা দুই হাজার বলা হলেও প্রায় একইসময়ে সংগৃহীত উপগ্রহ চিত্রে একটি শহরের অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া এবং অপরটির প্রায় ‘হাওয়া’ হয়ে যাওয়া ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির ভয়াবহতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। উপগ্রহ চিত্রটির বর্ণনা দিয়ে অ্যামনেস্টি বলছে, এ মাসের শুরুর দিকে বাগা ও দোরন বাগায় বোকো হারামের তাণ্ডবে প্রায় চার হাজার স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়। এছাড়া, নাইজেরিয়ান সরকারের দেওয়া বক্তব্য নাকচ করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো দুই হাজার লোকের নিহত হওয়ার কথা বললেও এখন তার চেয়েও অনেক বেশি প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটাকে ‘মহাবিপর্যয়’ বলেও মনে করা হচ্ছে। অ্যামনেস্টির গবেষক দানিয়েল আয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, ২ জানুয়ারি ও ৭ জানুয়ারি সংগৃহীত দু’টি উপগ্রহ চিত্রেই বোকো হারামের তাণ্ডবের ব্যাপারটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আগে গৃহীত অর্থাৎ ২ জানুয়ারির উপগ্রহ চিত্রে বাগা ও দোরন বাগার স্থাপনা ধরা পড়লেও পরে গৃহীত অর্থাৎ ৭ জানুয়ারির উপগ্রহ চিত্রে প্রায় মানচিত্র থেকেই ‘মুছে যায়’ একটি শহর, অস্পষ্ট দেখা যায় অপর শহরটিও। অ্যামনেস্টি জানায়, বাগায় অন্তত ৬২০টি স্থাপনা এবং দোরন বাগায় তিন হাজার একশ’রও বেশি স্থাপনা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আয়ার বলেন, এই দু’টি উপগ্রহ চিত্র বেসামরিক নাগরিক, তাদের বসতি, হাসপাতাল, স্কুল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার ভয়াবহতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে ওঠা বোকো হারামের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শিশুকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে। আগে থেকেই তারা নির্বিচারে হত্যালীলা চালিয়ে আসছিল। সম্প্রতি তাদের এ হত্যালীলায় যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে নারী- শিশুদেরও। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন নাইজেরীয় সরকার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে কিনা সে নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।