উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: প্রতিবন্ধীতা আটকে রাখতে পারেনি নড়াইলের লিমাকে। অদম্য ইচ্ছা শক্তি তাকে প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলতে সাহায্য করছে। সে হাঁটতে পারে না। তাই ঘর থেকে বের হতে গেলেই মায়ের কোলই তার ভরসা। লিমা নড়াইলের জুড়ালিয়া জেবিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। সে এ বছর নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। লিমা জানায়, আমার বাবাকে দেখিনি। আমি ছোট থাকতেই বাবা মারা গেছেন। আমাদের কোনো জমিজমা নেই। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে আমার লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করে। হুইল চেয়ারে বসলেও আমার সঙ্গে কেউ না থাকলে কোথাও যেতে পারি না। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন মমতাময়ী মা’ও। লিমার মা পান্না বেগম জানলেন তার কষ্টের কথা। লিমার বয়স যখন তিন, তখন তার বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। স্বামীর ভিটেবাড়ি নড়াইলের রতডাঙ্গা গ্রাম ছেড়ে প্রতিবন্ধী লিমাকে নিয়ে বাবার বাড়ি জুড়ালিয়া মহাজন গ্রামে চলে আসেন তিনি। সেই থেকে লিমাকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে নেমে পড়েন। বাবার বাড়িতে থেকেই লিমার মা হাঁস-মুরগি পালন করে সংসার চালান। সেই সামান্য অর্থ দিয়ে লিমাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চান। লিমার অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে অনুপ্রাণিত তার শিক্ষক, সহপাঠী এবং প্রতিবেশীরাও। নড়াইল সদরের জুড়ালিয়া জেবিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়র প্রধান শিক্ষক মোসলেহ উদ্দিন, লিমা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও সে স্কুলে নিয়মিত আসত। সাধারণ ছেলে মেয়েরা স্কুলে অনুপস্থিত থাকলেও সে কখনও স্কুলে অনুপস্থিত থাকতো না। লেখাপড়ায় খুব মনযোগী। তার প্রতিটি ক্লাসের রেজাল্টও ভালো। এসএসসি পরীক্ষায় লিমা ভালো ফলাফল করবে বলে সবাই আশা করছি।