বিডিপি ডেস্ক:
জাতিসংঘে মিয়ানমারের সাবেক অং সান সু চি সরকারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোই তুন বিশ্বকে সতর্ক করে বলেছেন, তার কাছে রিপোর্ট আছে যে, মিয়ানমারে ‘নির্বিচারে হত্যা’ চালাচ্ছে সামরিক জান্তা সরকার। খবর এনডিটিভির।
গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকারকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপরই জাতিসংঘে সু চি সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগ পাওয়া মিয়ানমারের দূত কিয়াও মোই তুনকে বরখাস্ত করে সামরিক জান্তা। কিন্তু কিয়াও জাতিসংঘ থেকে সরে যেতে অসম্মতি জানান।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের কাছে একটি চিঠি লিখেন মিয়ানমারের দূত কিয়াও। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় দুর্গম কানি জনপদে গত জুলাইয়ে ৪০টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
অবশ্য এ গণহত্যার খবর অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। দূরবর্তী এলাকা এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় বার্তাসংস্থা এএফপি স্বাধীনভাবে এ অভিযোগ যাচাই করতে পারেনি।
স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, গত ৯ ও ১০ জুলাই ওই জনপদের একটি গ্রামে মিয়ানমার সেনারা ১৬ জনকে নির্যাতন ও হত্যা করেছে। এর জেরে ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ।
জাতিসংঘে মিয়ানমারের দূত কিয়াও বলেন, স্থানীয় যোদ্ধা ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ের পর গত ২৬ জুলাই আরও ১৩টি মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, ২৮ জুলাই আরও ১৪ বছরের এক কিশোরসহ ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে মিয়ানমারের দূত ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার ওপর বৈশ্বিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের জোর আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ‘জরুরিভিত্তিতে মানবিক হস্তক্ষেপ’ প্রত্যাশা করেন।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে আমরা সামরিক বাহিনীকে কোনোভাবেই এ ধরণের নির্মমতা চালিয়ে যেতে দিতে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি সু চি সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখলের পর থেকে গণবিক্ষোভ মোকাবেলা করছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার। স্থানীয় পর্যবেক্ষরা জানান, এসব বিক্ষোভে সামরিক বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত ৯০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।