জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ভিটেমাটি ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে একই পরিবারের সহোদর ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। উপজেলার ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের বারইপটল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে মঙ্গলবার সকালে ৯৯৯ এ কল করে সহায়তার কথা জানালে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাদল ফকির মারা যান। এরপর থেকে স্বামীর বাড়িতে দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন স্ত্রী শিউলী বেগম। তখন থেকে অসহায় এ পরিবারের উপর নানাভাবে অত্যাচার শুরু করেন মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদল ফকিরের ছোট ভাই সৈকত ফকির ও তার পরিবারের লোকজন।অত্যাচার সইতে না পেরে ৪ বছর পূর্বে সন্তানদের নিয়ে সদর উপজেলার সোনটিয়া এলাকায় চলে যান শিউলী বেগম। সেখানে মেয়ে জামাতা হারুন অর রশিদের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন তিনি।
এ সুযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদল ফকিরের জমিজমাসহ বসতঘর হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা শুরু করেন সৈকত ফকির। মাঝে মধ্যে শিউলী বেগম বাড়িতে আসলেও তাকে ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। উল্টো শিউলি বেগমকে শারিরীক ও মানষিক ভাবে নির্যাতন করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিত।একপর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ওই মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর ভেঙ্গে নিঃচিহ্ন করে ফেলার চেষ্টা করেন সৈকত। খবর পেয়ে শিউলী বেগম মেয়েদের নিয়ে বারইপটলের ওই বাড়িতে আসেন। তাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠেন সৈকত।শুধু তা-ই নয়, বাড়ির আঙ্গিনাতেও তাদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।নিরুপায় হয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ৯৯৯ এ কল করেন শিউলী বেগম।
ভুক্তভোগী শিউলী বেগম বলেন, তার স্বামীর মৃত্যুর পর নানাভাবে অত্যাচার শুরু করে সৈকত ও তার পরিবারের লোকজন।এ কারনে তিনি বাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। প্রায়ই তিনি বাড়িঘরে আসতেন। তবে তাকে বাড়ির আঙ্গিনায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাকে না জানিয়ে তার বসতঘর ভেঙ্গে ফেলতে শুরু করে সৈকত।
এ ব্যাপারে দেবর সৈকত ফকির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিউলী বেগম ও তার সন্তানরা বাড়িঘরে আসেন না।তাছাড়া এ বাড়িতে তাদের কোন অংশ নেই।
এলাকাবাসী বলেন, এ পরিবারটি খুবই অসহায়।কোনভাবেই এ পরিবারটিকে এ বাড়িতে টিকতে দেওয়া হয়নি। নানাভাবে তাদের সম্পত্তি জবর-দখলের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদের বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতঘরসহ জমিজমা জবর-দখল করে নেওয়া হচ্ছে মর্মে ৯৯৯ থেকে থানায় ফোন আসে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আইনী সহায়তার মাধ্যমে উদ্ধার করি।