সুমন আহাম্মেদ, দেবিদ্বার, কুমিল্লা:
সৌদি আরবের রিয়াদ শহরস্থ সোলাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় একটি ফোম ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২ বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আর এ ঘটনায় নিহত ২ প্রবাসীর কুমিল্লাস্থ বাড়ি মুরাদনগরে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তাদের মা-বাবাসহ দুই পরিবারের সদস্যরা। হতভাগা প্রবাসীদের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনাটাই এখন স্বজনদের একমাত্র চাওয়া।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেলে সৌদি আরবের রিয়াদে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঐ দুই প্রবাসী নিহত হন। বৃহস্পতিবার জেলার মুরাদনগর উপজেলার রাজা চাপিতলা গ্রামের কৃষক ইসরাফিল হোসেনের ছেলে নিহত প্রবাসী ইকবাল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পরিবারের আর্তনাদ। নিহত ওই প্রবাসীর পরিবার জানায়, দুই বছর পূর্বে ইকবাল সৌদি আরবে যায়। যথাসাধ্য রোজগার করে সংসারের হাল ধরবে এটাই তার স্বপ্ন ছিল। এমনকি ২ মাস পর দেশে ফিরে একমাত্র বোনকে বিয়ে দিয়ে নিজেও বিয়ে করার কথা ছিল তার। ৩ ভাই ১ বোনের মধ্যে একমাত্র ইকবালই ছিল উপার্জনক্ষম। তাকে হারিয়ে তার পরিবার এখন দিশেহারা।
অপরদিকে একই উপজেলার ধনপতিখোলা গ্রামের আ: গনির ছেলে নিহত প্রবাসী রবিউলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় মা- বাবা, স্বজনদের আর্তচিৎকার আর আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে ওঠেছে। নিহত প্রবাসী রবিউলই সংসারের একমাত্র চালিকা শক্তি বলে জানায় তার পরিবারের লোকজন। ৩ বোন ২ ভাইয়ের মধ্যে সে সবার বড়। শোকাহত পরিবারকে শান্ত্বনা দিতে এলাকার শত শত লোকজন এসে ওই বাড়িতে একত্রিত হচ্ছে। এলাকাবাসিসহ দুই প্রবাসীর স্বজনরাই অতিদ্রুত তাদের সন্তানের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে কতৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইউছুফ আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে ঐ ২ প্রবাসীর বাড়িতে পাঠিয়েছি এবং প্রতি পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সৌদি আরবে নিযুক্ত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে আমি যোগাযোগ করেছি। নিহত প্রবাসীদের লাশ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন বলেন, আমরা ২ পরিবারের সার্বিক খোঁজ-খবর রাখছি।