মেছতা বা মেলাসমা ত্বকের পিগমেনটেশন জাতীয় সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের নারী ও পুরুষ উভয়েই আক্রান্ত হতে পারেন এই সমস্যায়। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে পড়ে। মানুষের ত্বকের মেলানিন নামক একটি উপাদান থাকে যার উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে ত্বকের রঙ ফর্সা কিংবা কালো হয়। কিছু কারণে মেলানিন তৈরির ভারসাম্যতা নষ্ট হতে পারে। এতে ত্বকের কিছু কিছু অংশে অধিক মেলানিন উপস্থিতির কারণে ত্বকের রঙ কালো হয়ে যায়। যদিও মেছতার কারণে ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয় কিন্তু এটি ত্বকের জন্য বিশেষ ক্ষতিকর নয়।
সাধারণত মেছতা দুই গালে, চোখের নিচের অংশে শুরু হয়। আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে মুখমণ্ডলে। এছাড়া নাকের উপরে, কপালে, গলায় ও ঘাড়ে মেছতা হতে পারে। মেছতা হওয়ার জন্য দায়ী সূর্যের আলো-সানব্লক ব্যবহার না করে অতিরিক্ত সূর্যের আলোর সংস্পর্শে যাওয়া, হরমোনের তারতম্য, নিয়মিত জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি কিংবা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি গ্রহণ। বংশগত কারণ ও নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার না করার কারণেও হতে পারে এ সমস্যা।
মেছতা পুরোপুরি প্রতিকার করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। তবে অবস্থার উন্নতি ঘটানো সম্ভব। তাই মেছতায় আক্রান্ত হলে অবশ্যই একজন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মেছতা চিকিৎসায় সাধারণত কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়। যেমন-হাইড্রোকুইনোন, রেটিনয়িক এসিড, স্টেরয়েড, এজেলিক এসিড ইত্যাদি। এছাড়া উন্নত চিকিৎসার অংশ হিসেবে কিছু লেজার থেরাপিও দেওয়া যেতে পারে। তবে মেছতার চিকিৎসায় অন্যতম প্রধান ভূমিকা হলো সান প্রটেকশন ব্যবহার করা। সানস্ক্রিন ছাড়া রোদে বের হওয়া একদম উচিত নয়। এছাড়া বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা, হ্যাট বা স্কার্ফ ব্যবহার করা। কারণ কোনো সানস্ক্রিনই শতভাগ প্রটেকশন দিতে পারে না।
ডা. তানজিয়া নাহার তিনা
চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ