জাহিদ মাহমুদ, মেহেরপুর: মেহেরপুর শহরে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় মেহেরপুর কলেজ মোড় হতে একটি র্যালি বের হয়ে মেহেরপুর বাসস্টান্ড, হোটেল বাজার, বড় বাজার, ওয়াপদা মোড়সহ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূন:রায় ওয়াপদা মোড়ে এসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের গাংনী ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা আমির সাহারুল ইসলাম, মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগরের আমির শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
শরিফুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, ”জঙ্গিবাদ কোন ধর্মই সর্মথন করে না, জঙ্গিবাদ কোন ধর্মের শিক্ষা হতে পারে না। স্বার্থান্বেষী কতিপয় নাম ধারী আলেম, ধর্মব্যবসায়ী মোল্লা শ্রেণি ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষকে অন্যায়-অশান্তির মধ্যে ঠেলে দিয়ে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছে। আল্লাহর রসুলের ইসলাম এরকম ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, ”এক দিন রসূল (সা:) কাবা ঘরে হেলান দিয়ে বসে ছিলেন। এক সাহাবী এসে রসূল (সা:) কে বললেন, হে আল্লাহ রসূল (সা:), আর নির্যাতন সহ্য করতে পারছিনা। আপনি আল্লাহকে বলুন, এই জাতি ধ্বংস হয়ে যাক। আল্লাহর রসূল (সা:) সোজা হয়ে বসে বললেন, না আমি ধ্বংসের দোয়া করতে পারি না। অতি শীঘ্রই দেখতে পাবে একজন সুন্দরী যুবতী নারী সারা শরীরে র্স্বণ অলংকার পরে শত-শত মাইল পথ হেটে যাবে, তার মনে বন্য প্রাণী ও আল্লাহর ভয় ছাড়া আর কোন ভয় থাকবে না।” এখানে আল্লাহর রসূল (সা:) কিসের ইঙ্গিত দিলেন? ন্যায়, সু-বিচার, শান্তির, নিরাপত্তার।
তিনি বলেন, ”আর একটি ঘটনা, তায়েফবাসী রসূল (সা:) এর কথা শুনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু রসূল (সা:) এর উপর তারা অনেক নির্যাতন করে, এই নির্যাতন দেখে একজন মালায়েক (ফেরেশতা) আল্লাহর রসূলকে (সা:) বলেছিলেন, হে আল্লাহর রসূল আপনি হুকুম দিন, দুই পাহাড় দিয়ে তায়েফবাসীকে ধ্বংস করে দেয়। রসূল (সা:) বললেন না, তারা বোঝে না। তাদের জন্য ধ্বংসের দোয়া করলে, আমি কাদের কাছে এই সত্য প্রচার করবো? তাহলে আজ আপনারা বুঝতে পারলেন? এক জন মানুষ, এক জন ফেরেশতা, রসূল (সা:) ধ্বংসের জন্য বলেছিলেন। কিন্তু রসূল (সা:) ধ্বংসের দোয়া করেন নাই। অথচ আজ একটি শ্রেণী, সেই রসূলের দোহায় দিয়ে ইসলামের নামে মানুষকে বিনাশ করতে চাই, ধ্বংস করতে চাই। অতএব আপনার আজ বুঝতে পারছেন এটা আল্লাহ ও রসূলের ইসলাম না। তাই আমাদের জঙ্গিবাদ নির্মূলে প্রত্যকে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে। ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ১৬ কোটি বাঙ্গালীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জঙ্গিবাদ মুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে হেযবুত তওহীদ ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা সর্বস্তরের মানুষের মাঝে তুলে ধরেছেন এবং সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়ীকতার বিরুদ্ধে নি:স্বার্থভাবে কাজ করে চলেছে। দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে জঙ্গিবাদ বিরোধী গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবানও জানান তিনি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, গাংনী উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান, আ. লীগ নেতা রাজু আহাম্মেদ(মিন্টু)সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মী, প্রশাসনের সদস্যগণসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শত শত সাধারন জনতা।