ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের নান্দাইলে পারিবারিক কলহ ও সংঘর্ষে পিতা-পুত্র ও ভাতিজা মিলে মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বাঁশহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ খোকন (৩০) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলার বাঁশহাটি গ্রামের বিল্লাল মিস্ত্রি ও লাল মিয়া সহোদর ভাই। লাল মিয়া বড়। তাদের বোন কোহিলা বেগমের কাছে ৪০ হাজার টাকা ধার চেয়েছিলেন লাল মিয়া। কোহিলা টাকা ধার দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় লাল মিয়া ও তার ঘরের সদস্যরা ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে তারা কোহিলা ও কোহিলার ঘরের সদস্যদের মারধর করেন।
এ ঘটনা শুনে বিল্লাল মিস্ত্রি ক্ষুব্ধ হন এবং বোনের পক্ষ নেন। বিল্লাল ও তার ঘরের সদস্যরা লাল মিয়ার ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়।
এর জের ধরে লাল মিয়া ও তার ঘরের সদস্যরা শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিল্লাল মিস্ত্রির ঘরে হামলা চালায়। এতে বিল্লাল মিস্ত্রি, তার তিন ছেলে ফরিদ, হিমেল ও পাভেল ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। আহত হয় বিল্লালের স্ত্রী বানেছা বেগম (৫২)।
এদিকে পুলিশ শনিবার সকালে লাল মিয়ার ছেলে জামালের (৩০) মৃতদেহ লাল মিয়ার বাড়ির পাশে একটি পুকুরের পাড় থেকে উদ্ধার করেছে। পুলিশ মোট পাঁচটি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
বিল্লাল ও তার তিন ছেলেকে জামালই হত্যা করেছে বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। জামালকে কে হত্যা করেছে, সে ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি।
এদিকে বিল্লাল ও লাল মিয়ার বোন কোকিলা বলেছেন, লালের ছেলে জামাল ও কামাল দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বিল্লাল ও তার তিন ছেলেকে হত্যা করেছে।
লাল মিয়া ও তার ঘরের লোকজন পালিয়ে গেছে। এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় ব্যাপক ভীতির সঞ্চার হয়েছে। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ হারুন অর রশিদ জানান, লাল মিয়া ও তার লোকেরা লাল মিয়ার সহোদর ভাই বেলাল মিস্ত্রি, তিন ভাতিজা ফরিদ মিয়া, পাভেল ও হিমেলকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। বেলালের স্ত্রী বানেছা বেগম গুরুতর আহত হয়েছেন। বানেছা বেগমকে প্রথমে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নান্দাইল থানার ওসি সৈয়দ আবদুল্লাহ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।