জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানায় প্রবেশ নিয়ে প্রশাসন ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও পরে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে যমুনা সার কারখানার প্রধান গেটে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা ও সদস্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তাদের মাঝে চাপা ক্ষোভসহ জিএম প্রশাসনের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও নেতারা। শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিলের মধ্যে জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেনকে সার কারখানার গাড়ী দিয়ে কর্মস্থল থেকে বাসায় পাঠিয়ে দেয় কারাখানা কর্তৃপক্ষ।
জেএফসিএল এর জিএম প্রশাসন ও জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী সূত্রে জানা গেছে, যমুনা সার কারখানার শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের প্রচার ও শ্রম কল্যাণ সম্পাদক ও মাষ্টার টেকনিশিয়ান ময়েন উদ্দিন সার কারখানায় তার কর্মস্থলে যোগ দিতে প্রধান গেটে স্বাক্ষর ছাড়াই দেরীতে প্রবেশ করতে যায়। এ সময় সার কারখানার জনৈক কর্মচারী ময়েন উদ্দিন জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা পরিচয় করিয়ে দিলে জিএম প্রশাসন ওই নেতাকে কঠাক্ষ করে উক্তি করেন। ওই উক্তির বিষয়টি জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবগত হয়ে সার কারখানার ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খানকে অবগত করেন। এ বিষয়টি শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তোপের মুখে সার কারখানার ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান এর নির্দেশে জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেন সার কারখানার গাড়ী দিয়ে কর্মস্থল থেকে বাসায় যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি গাড়ীতে উঠলে তাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্য ও নেতারা। জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেন সার কারখানার গাড়ী যোগে বাসায় যেতে গাড়ীতে উঠলে তাকে নামিয়ে দিয়ে পায়ে হেটে কারখানা গেট থেকে বাসায় যেতে বাধ্য করে শ্রমিক কর্মচারী ও নেতৃবৃন্দরা। এ নিয়ে সার কারখানার কর্মকর্তাদের মাঝেও ক্ষোভ বিরাজ করে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাগণ মত প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের প্রচার ও শ্রম কল্যাণ সম্পাদক ও মাষ্টার টেকনিশিয়ান ময়েন উদ্দিন জানান, আমি কারখানা গেটে প্রবেশ করার সময় জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেন ও নিরাপত্তা উপ-পরির্দশক হান্নানুজ্জামান গেটে দাড়িয়ে ছিলেন। এসময় আমি গেটে স্বাক্ষর এন্ট্রি করে ঢুকলেও আমাকে কঠাক্ষ করে। আমি এ বিষয়টি জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানালে তারা এমডিকে অবগত করেছেন। পরে গেট থেকে জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেন গাড়ী যোগে বাসায় যেতে চাইলে গাড়ীতে যেতে হবে না হেটে যান বলে সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান জিএম প্রশাসনকে গেট থেকে পায়ে বাসায় পাঠান বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে কর্মচারীর প্রতি খারাপ বাক্য প্রয়োগ করা ঠিক হয়নি। এ বিষয়টি শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে যাতে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য যমুনা সার কারখানার ব্যাহস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান স্যার জিএম প্রশাসনকে কারখানা থেকে তার বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেন জানান, সার কারখানার গেটে অফিসিয়াল সময়-সীমার মধ্যে শ্রমিক কর্মচারীদের নাম এন্ট্রি করে কারখানায় সময় মত ও দেরীতে আসা সবাইকে খাতায় এন্ট্রি করে কারখানায় প্রবেশ করার দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় দেরীতে আসা সিবিএ নেতা মঈন উদ্দিনকে খাতায় এন্টি করে যেতে বলি। পরে এ বিষয়টি নিয়ে কারখানার ভিতরে গিয়ে সিবিএ’র সভাপতি সাধারণ সম্পাককে অর্গানাইজ করে আমার বিরুদ্ধে শ্লোগান অকথ্য ভাষায় খোয়া গালিগালাজ পেড়ে আমাকে বের করে দিয়েছে কারখানা থেকে। এর পর আমি গাড়ীতে উঠলে আমাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দিয়ে পায়ে হেটে বাসায় যেতে বাধ্য করে। এ ঘটনাটি আমি বিসিআইসির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি তার প্রেক্ষিতে এমডি কে লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলেছেন। এ বিষয়ে এমডিকেও পরিস্থিতি প্রতিবেদন পাঠানোর অনুরোধ করেছি।
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার ব্যাহস্থাপনা পরিচালক (এমডি)মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান এর নিকট মোবাইল ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।