সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিপাইগঞ্জ বাজার সংলগ্ন শ্রী শম্ভু নাথ রায়ের বাড়ির সামনে উঠানে অবস্থান করছেন নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের জয়চন্ডী গ্রামের শ্রী দিনেশ চন্দ্র রায়ের কন্যা শ্রীমতি অঞ্জনা রায়। সে উত্তরা ইপিজেড এর সোয়েটার কোম্পানীতে কর্মরত। গত ১৮ এপ্রিল বিকাল ৩টা থেকে সে অনাহারে সেখানে অবস্থান করছে। তার দাবি একটাই তার প্রেমিককে তার সামনে এনে দেন। ওর সাথে বোঝাপড়া আছে।
অঞ্জনা রায় জানান, দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস পূর্বে শম্ভু নাথ রায়ের পুত্র শ্রী চন্দ্র রায় তার আত্মীয় কেশব রায়ের মাধ্যমে বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে আমাকে দেখতে আমাদের বাড়িতে আসেন। কেশব আমার প্রতিবেশীর মেয়ে জামাতা। আমাকে পছন্দ হওয়ায় সেখান থেকেই বিয়ে করার প্রতিশ্র“তিতে চন্দ্রের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ও প্রেম। দীর্ঘদিনে চন্দ্র দেখা করা ছাড়াও তার সাথে তার বন্ধুদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়াসহ শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ে তোলে। এমনকি আমাদের বাড়িতেও চন্দ্র নিয়মিত যাতায়াত করতো। কিছুদিন পূর্বে চন্দ্রকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে সে যৌতুক দাবি করে। যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে আমার সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় গতকাল খবর পাই সে অন্যত্র মোটা অংকের যৌতুক নিয়ে গোপনে বিয়ে করছে। তাই তৎক্ষনাত তার বাড়িতে এসে অভিভাবকদের বিষয়টি জানাই। কিন্তু তারা আমার কথায় ভ্র“ক্ষেপ না করে যৌতুক নিয়ে ঠিক হওয়া মেয়ের সাথে বিয়ের আশির্বাদ পর্ব সম্পাদন করেছেন। আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি, গেটে তালা দিয়ে তারা সবাই কোথায় যে গেছে জানিনা। এখানে আসার পর থেকে চন্দ্র আমার সামনে আসেনি এমনকি তাকে মোবাইলেও পাওয়া যাচ্ছেনা। ফলে চরম অসহায়ের মতো সারাটা রাত খোলা আকাশের নিচেই অবস্থান করেছি এবং এখন পর্যন্ত অনাহারে রয়েছি। চন্দ্র আমাকে বিয়ে না করা পর্যন্ত কোন কিছু খাবোনা এবং প্রয়োজনে মৃত্যুকেই আলিঙ্গণ করবো।
এ ব্যাপারে চন্দ্রকে না পেয়ে তার পিতা শম্ভুকে জিজ্ঞাসা করার জন্য বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখা যায় দরজায় তালা দেয়া। উপস্থিত অনেকের মন্তব্য বাড়ির সবাই পালিয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, শুধুমাত্র যৌতুকের লোভে চন্দ্র এমন প্রতারণা করে অন্যত্র বিয়ে করার পায়তারা করছে।
এলাকার সাবেক ইউপি মেম্বার সেকেন্দার আলী জানান, একটি মেয়ের সাথে প্রেমের নামে প্রতারণা খুবই অন্যায়। এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না। তবে একটি পক্ষ ১ লাখ টাকার বিনিময়ে বিয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
প্রশাসনকে বিষয়টি এখনও জানানো হয়নি। তবে কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু তাকে মোবাইলে না পাওয়ায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। কৌতুহলী লোকজন দলে দলে এসে মেয়েটিকে একনজর দেখে যাচ্ছে এবং এ অন্যায়ের বিচার দাবি করেছে।